এখন আগষ্ট মাস – শ্রাবণ পেরিয়ে ভাদ্র এল। বাতাসে শরতের অপেক্ষা তবু বিগত
মাসখানেকের কিছু কম সময়েই মাতাল শ্রাবণ তার উদ্দামতার যে বিপর্যয়ের চিহ্ন রেখে গেল
গোটা বাংলায়, ভাবলে শিউরে ওঠে মন। ঘোর প্লাবনের অশুভ ছায়ায় বিপর্যস্ত আজ সমগ্র
বাংলা – প্রথমে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা বর্ধমান, হাওড়া, হুগলী, পশ্চিম
মেদিনীপুরের বিস্তীর্ন অঞ্চল জলের তলায়, বিশেষতঃ ঘাটালে জল এতটাই বেড়েছে যে অবস্থা
সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এরপর বৃষ্টির প্রাবল্য আরও বেড়ে ভাসাল
উত্তরবঙ্গের বহু অঞ্চল – ডুয়ার্স, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ি,
ধূপগুড়ি,ফালাকাটা, আলিপুরদুয়ার এমন বহু অঞ্চল এখন বানভাসি। সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন –
সড়ক, রেলপথ বেশ কিছুদিন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। আশার কথা এই যে সম্প্রতি গত দুদিন
বৃষ্টির তান্ডব একটু স্তিমিত হওয়ায়, জল
নামতে শুরু করেছে এবং সড়ক ও রেল যোগাযোগ পূনস্থাপিত হয়েছে। দূর্গতদের অঞ্চলে ধীরে
ধীরে সরকারী, বেসরকারী ও নানান স্বয়ংসেবক সংস্থা গিয়ে পৌঁছেছে, এখনও দলে দলে
পৌঁছচ্ছে।
এরই মধ্যে বিষাদগস্থ মনে পালন হয়ে গেল দেশের একাত্তরতম স্বাধীনতা দিবস
অনুষ্ঠান। দেশের সর্বাঙ্গীন উন্নতি সাধন কল্পে নতুন করে অনেক শপথ, প্রতিশ্রুতি
যথারীতি মহা সমারোহে উচ্চারিত হল। আপামর দেশবাসীর মনে আশা জমা রইল সুদিনের জন্য।
শরতকাল আগতপ্রায়, শিউলি, কাশে আর কদিনের মধ্যেই ভরে উঠবে বাংলার মাঠ-ঘাট। মনে
বাজতে শুরু করে দিয়েছে আগমনী সুর – বাংলার সর্বোৎকৃষ্ট উৎসব দূর্গা পুজো প্রায় এসে
পড়ল, বাকি মাত্র হাতে গোনা কটা দিন।
উৎসবের দিন ভাল কাটুক আপনাদের সবার – একটাই আন্তরিক আবেদন জানাই, আনন্দের মাঝে
চিন্তা-ভাবনার ভিতর সেই সব দূর্গত বানভাসিদের কথা একটু স্থান দেবেন। যে যেমন ভাবে
পারেন, বাড়িয়ে দিন আপনাদের সহৃদয় সাহার্যের হাত। মনে রাখবেন এ আমাদের এক নৈতিক ও
সামাজিক দায়িত্ব।
অন্যান্যবারের মতই এ সংখ্যার জন্য ভাল সংখ্যায় আপনাদের লেখা জমা পড়েছে। সমস্ত
রচনাকার ও বিপুল পাঠককুলকে চিলেকোঠা ওয়েবজিনের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আসন্ন শারদীয়া উৎসবে সকলকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের মত শেষ করলাম।
No comments:
Post a Comment