মানুষগুলি অনেকদিন অপেরা দেখেনি।
শেষপর্যন্ত অপেরা আসছে রবিবার। জরাজীর্ণ রাজবাড়ীর জলসাঘরে।
আমগাছ, জামগাছ, কাঠালগাছ পেড়িয়ে ঢেঁকি-রিকশায় চেপে টুপি পরা লোকটা চোঙা ফুঁকছে রাতদিন – "আসেন আসেন, দেখে যান ৩ আনার অপেরা। মাত্র ৩ আনা।"
আজ রবিবার। কেউ জানেনা কখন শুরু হবে অপেরার গান। সূর্য অস্ত যেতেই পশ্চিমের অন্ধকার ঠেলে বেজে উঠল বিচিত্র কনসার্ট।
বেশ কিছু লোক সঙ সেজে এগিয়ে চলেছে ভাঙা রাজবাড়ীটার দিকে। সবার পিঠে লেখা আছে - “৩ আনা অপেরা'র সঙ”। কারুর গলায় হারমোনিয়াম, কারুর হাতে বেহালা, বাঁশী, তাসা কিংবা ডুগডুগি।
সঙেদের পিছু পিছু সারিবদ্ধ জনতা, দেওয়ালের তৈলচিত্রে জমে থাকা ঝুল, ভাঙা ছাদ থেকে ঘরে নেমে আসা চাঁদ... আর পুতুল নাচের মত দুলে চলা সঙ আর মানুষের ছায়া।
কারুর মুখেই কোনো কথা নেই। সবাই চুপটি করে শুনে চলে বিচিত্র কনসার্ট। অচেনা সুরের সাথে ওরা যেন বোকা বোবা সঙ হয়ে গেছে।
মোমবাতি হাতে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে অপরূপা নগ্ন সুন্দরী। সবাই এদিক ওদিক চায় কেউ কি তাকিয়ে আছে তার দিকে? তারপর নিশ্চিন্তে যৌবনে মিশে যায়।
সুন্দরী চলে গেলে কক্ষে প্রবেশ করে সুঠাম উলঙ্গ এক পুরুষ। ওকে দেখে জনতাও একে একে খুলে ফেলে পরিধেয় যত। অপেরার বাজনা বেজে চলে।
সঙ সাজা শিল্পীরা এবার বেরিয়ে এসেছে উন্মুক্ত সবুজ প্রান্তরে। ওদের পেছনে সারি বেঁধে উলঙ্গ নারী আর পুরুষের দল।
ভাবছেনা কেউ, কতটা সময় ধরে কতদূর.. হেটে যেতে হবে "৩ আনার অপেরা"র সাথে... এইভাবে। কতদূর, কতটা সময়!
তিন আনার অপেরা মানব মনের নগ্ন রুচির গোপন রূপ প্রকাশ করে দিল।
ReplyDelete