ভালবাসা _দিবসের_লেখা
"প্রিয়বরেষু ,"
(আহা ! মনটা বাহা বাহা করে উঠলো গো - একখানা চিঠি লেখার বাহানা পেয়ে ! বারো ক্লাস অব্দি যত চিঠি পরীক্ষার খাতায় লিখেছি - কোনো প্রশ্নপত্রে প্রেমপত্র লিখতে বলেনি গো ! আজ লিখবোই !)
"তুমি কেমন আছো? আমি ভালো আছি |"
{সেরেছে - প্রেমপত্র ব্যাপারটা লেখে কেমন করে ? কোনো নোটবুক কলেজ স্ট্রিট এ পাওয়া যায় নাকি ?}
"কতদিন তোমাকে দেখিনা | খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো করছো তো ? আবার যেন ম্যালেরিয়া না হয় !
"
( আচ্ছা - বিয়ের আগের আড়াই বছর সপ্তাহে তিনটে করে চিঠি লিখতে কি করে শুনি? এখন দিনে তিনটে ফোন করো কি না সন্দেহ ! তিন মিনিট পার হয় কি না আরো সন্দেহ !
)
"আচ্ছা, বিয়ের আগে পরে সবাই যে জিজ্ঞেস করতো - আমার মতো কালো মোটা কুচ্ছিত মাথায় চুল নেই এক নারী কে - তোমার মতো ইউরোপিয়ান চেহারার মানুষ কেন বিয়ে করতে গেলে - তুমি এক চিলতে হেসে এড়িয়ে যেতে | আমি জিজ্ঞেস করলেই বলতে - দু বছর পর বলবো | দু বছর পেরোলে বললে - পাঁচ বছর পর বলবো | তারপর ভুলেই গেছি জিজ্ঞেস করতে | আজ তো প্রায়পঁচিশ এর দরজা এসে গেলো | এখন বলবে কি?"
(সত্যি কথা -ভালোবাসার সংজ্ঞা আমি আজও বুঝিনি | ভালোবাসা দিবস - কেমন বায়বীয় আর ব্যবসায়িক শব্দ আমার অভিধান এ |
দুর্ঘটনায় ডান পা টা হারালাম | যতদিন হাসপাতালে ছিলাম, পাশের বিছানায় রইলে, আমার না খাওয়া খাবার খেলে - একদিন জিজ্ঞেস করলাম - ব্যাগ টা এতো বড়ো লাগছে - কি আছে? তুমিনিজেই অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে ব্যাগটা খুললে | হে ভগবান - দুর্ঘটনার সময়ে আমার পায়ে যে সাদা এডিডাস এর জুতোটা ছিল - রক্তমাখা তোবড়ানো গাড়ির তলায় থ্যাঁতলানো সেইজুতোজোড়া - ব্যাগে নিয়ে ৪দিন ধরে ঘুরছো !
ভালোবাসা দিবসের জ্বলন্ত সংজ্ঞা !
আমার বাবা চলে যাবার সময়ে হাসপাতালে আমি গেলে ভিসিটর পাস চাইতো - তোমাকে ছেলে বলে চিনতো | নাভি বিসর্জন ও তুমি দিলে - আরেক ভালোবাসা দিবস |)
" বেশ তবে ওই কথাই রইলো - এবারের ভালোবাসা দিবসে তুমি ঐ লাল গোলাপ, টেডি বেয়ার, চকলেট, গ্রিটিংস কার্ড - ইত্যাদি প্রভৃতি কিনে দিও | আমি মুখপুস্তিকায় ছবি দেব |
"
( উদাত্ত উত্তাল হাসি
- দু হাতে আমার চুলের মুঠি ধরে বললে - পাগলী একটা !
৫১ বছরে পা দিয়েও ভালেন্তি পুজো - মানে 'ভালোবাসা-দিবস'
- আমার না পাওয়াই রয়ে গেলো গো!!)
Tui khub bhalo likhish re....
ReplyDeleteসম্পূর্ণ স্বকীয়তায় অনবদ্য বাক্য শৈলী
ReplyDeleteদৃঢতা প্রসংশনীয়
নিজের মনের কথা বলা হয়েছে
যেমন টি মন বলতে চেয়েছিলো
পাঠক রাজহাঁস
সার বস্তু টি চায় শুধু
একেবারে অন্য রকম। অনিন্দ্য লেখনী।
ReplyDeleteChuye gelo.
ReplyDelete