পায়েস টা নাড়তে নাড়তে
মেধা ভাবল একবার ঈশিতাকে ফোন করে দেখি কখন আসবে। তারপর ভাবল থাক, ছেলের জন্মদিনের
পায়েস, কথা বলতে গিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে গেলে পুড়ে যেতে পারে। দিনের বেলাটা পুরো
বাঙালি মতে ডাল, ভাত, শুক্তো, পাঁচরকম ভাজা, মাছ, পায়েস এসব করে দেবে। রাতে সব
বাইরে থেকে অর্ডার করা। ঋজু এসবে খুশি নয়। আজকাল নাকি কারুর এভাবে বাড়িতে
জন্মদিন হয় না। ওর বন্ধুদের সবার জন্মদিনে হোটেলে পার্টি হয়। ঋজুও অনেক বায়না
করেছিল। মেধা বা অপূর্ব কেউই রাজি হয়নি। ছেলেকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে
"অন্যরা কে কি করে তাতে আমাদের কি? আমরা আমাদের মত করে পালন করব। সবকিছু কি
লোকের দেখাদেখি করতে হবে"?
এসবে ছেলের মন ভরে নি।
স্কুলে আর ওর 'প্রেস্টিজ' থাকবে না। মা বাবা যেন ইচ্ছা করেই এসব করে। সবসময়
বন্ধুদের কাছে ওকে লজ্জা পেতে হয়। ওর বন্ধুরা 'ভ্যাকেশনে' 'ফরেন ট্যুর' করে আর ওরা
প্রত্যেকবারই ভারতবর্ষের মধ্যেই কোনো জঙ্গল, হিল স্টেশন নয় সি বিচ। সেই কবে একবার
মালয়েশিয়া আর সিঙ্গাপুর গেছিল। ব্যাস, ঐ শেষ। কতবার হং কং, মরিশাস, অস্ট্রেলিয়ার
প্ল্যান হয়, তারপর সেসব প্ল্যানই থেকে যায়।
ঋজুর মনে একটা
'ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্স' ক্রমশ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। পড়াশুনোয় ক্লাসের ফার্স্ট
বয় হলেও বাকি সবকিছুতেই ও যেন পিছিয়ে। বন্ধুরা সবসময়ই 'ব্র্যান্ডেড' জামা, জুতো
পড়ে, ওদের জন্মদিনে মা বাবারা দামি ঘড়ি, ট্যাব এসব গিফ্ট করে। ঋজুর মা এখনো সেই
একঘেয়ে গল্পের বই নয় খেলনা দিয়ে চলেছে। কিছু চাইলেই হল, মায়ের সেই এক ডায়লগ "
ঋজু আমরা মধ্যবিত্ত, তোমার বন্ধুদের সাথে তুলনা করলে আমাদের চলবে না। নিজেরটা নিয়ে
সন্তুষ্ট থাকতে শেখ।" এইসব জ্ঞান শুনতে ঋজুর ভালো লাগেনা। তাই এবার ও সাফ বলে
দিয়েছে জন্মদিনে ওর স্কুলের কোনো বন্ধুকে 'ইনভাইট' করার দরকার নেই। মেধা আর
ব্যাপারটাকে বেশি পাত্তা দেয়ার প্রয়োজন মনে করে নি। ওরা ওদের মত করে জন্মদিন পালন
করবে, দরকার নেই অত বড়লোক বন্ধুদের।
রান্নাবান্না প্রায় শেষ।
এবার ঘরদোরগুলো চট করে একটু পরিস্কার করে নিতে হবে। ঋজুর গল্পের বইয়ের তাকে গুছাতে
গিয়ে টেস্ট কপিগুলো চোখে পড়ল। গল্পের বইয়ের মধ্যে গোঁজা। ঋজু তো বলেছিল টেস্ট কপি
এখনো বেরোয় নি। অঙ্কেতে বেশ কম পেয়েছে। অনেকগুলো ভুল করেছে। সবকটাই কেয়ারলেস
মিসটেক। ইংলিশ টাতেও একটু কমই পেয়েছে। গ্রামারে ভুল। নির্ঘাত সেই হড়বড় করতে গিয়ে।
সায়েন্স আর এস এস টি তে ভালো পেয়েছে। খাতাগুলো দেখে মেধা চেঁচাল "ঋজু এদিকে
এসো"। ঋজু টি ভি দেখা ছেড়ে ওঠার কোনো লক্ষণও দেখাল না। বড্ড ধ্যাটা আর অবাধ্য হয়ে উঠছে ছেলেটা দিনদিন। নিজেই রেগে
গড়গড় করতে করতে ঘর থেকে বেরিয়ে মেধা খাতাগুলো ঋজুর মুখের সামনে ধরল।"এগুলো
কি? তুমি যে বলেছিলে টেস্ট কপি বেরোয় নি? মিথ্যে কথা বলতে কোত্থেকে শিখলে?"
ঋজুর স্পষ্ট উত্তর "তোমার থেকে"।
এরকম একটা উত্তরের জন্য প্রস্তুত ছিল না মেধা। চোখ কপালে তুলে ছেলেকে প্রশ্ন করল,"আমার
থেকে? আমি মিথ্যে কথা বলি?" ঋজুও ততধিক জোর গলায় বলল "হ্যাঁ বলোই
তো"। মেধা প্রায় চিৎকার করে উঠল "কি মিথ্যে বলেছি রে আমি?"
সোজা মায়ের চোখের দিকে
তাকিয়ে ক্লাস ফোরের ছেলে বলল "তুমি আমায় বলেছিলে তুমি আর বাবা সিদ্ধিবিনায়কে
গণেশের ইঁদুরের কানে প্রে করেছিলে, আর তাই গনুদাদা আমায় তোমার পেটের মধ্যে পাঠিয়ে
দিয়েছিল। ওখানে আমি কিছুদিন খেলা করেছিলাম, তারপর একদিন সেভেন হিলসে ডক্টর পাণিকার
আমায় তোমার পেট কেটে বার করে তোমার কোলে দিয়ে দিল। আসলে তো গড বা গনু দাদা আমাকে
পাঠায় নি। তুমি আর বাবা সেক্স করেছিলে বলে আমি হয়েছি। কথাগুলো শুনে মেধার মাথা ভোঁ
ভোঁ করতে লাগল। মনে হল এক্ষুনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাবে। প্রায় অস্ফুট স্বরে বলল
"তোমাকে কে বলল এসব কথা?" "অংশুমান আর প্রাঞ্জল বলেছিল আর রোহনের
বার্থডে পার্টিতে ওর ট্যাবে তো আমরা ছবিও দেখেছি।" মেধার সারা শরীর কাঁপছে।
কি বলবে বা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। ঋজু তখনও বলে চলছে "তুমি আমায় আরো মিথ্যে
কথা বলে এসেছো। বাবা আর আঙ্কলরা পার্টিতে যেগুলো খায় তুমি বলতে ওগুলো বড়দের কোল্ড
ড্রিঙ্ক, খুব ঝাল। ওগুলো তো আসলে হুইস্কি। এলকোহল বলে, খেলে নেশা হয়। আমি
ইন্টারনেটে সব পড়েছি"। নেহাত আজ ওর জন্মদিন বলে কথা, নইলে মেধা ঠাস করে দুটো
চড় লাগিয়ে দিত ঋজুর গালে।
কোনোমতে নিজেকে সামলে ঘরে
চলে গেল মেধা। দুহাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠল। জীবনে এত বড় আঘাত মেধা আগে
কখনো পায় নি, বাবা মারা যাওয়ার সময়ও নয়। চাকরি ছেড়ে বাড়িতে বসে আছে ছেলেকে মানুষের
মত মানুষ করবে বলে। ছোট থেকে গল্পের বই পড়ে শোনানো, ভালো ছবি, ভালো সিনেমা দেখানো,
এক সুন্দর নির্মল জগৎ ছেলেকে তৈরি করে দিতে চেয়েছিল মেধা। কত কম বয়সেই কত জিনিস কত
সরল ভাবে ঋজুকে শিখিয়ে দিয়েছিল। আজ যেন সবকিছু টুকরো টুকরো হয়ে গেল। ছেলে কি আর
কোনোদিন ওকে ভরসা করবে? প্রযুক্তির ছোবল নষ্ট করে দিল ওর ছেলের শৈশব। অঝোরে কেঁদে
চলেছে মেধা। ছেলের কাছে মিথ্যেবাদী প্রমাণিত হওয়ার দুঃখ না কি ছেলের শৈশব নষ্ট হয়ে
যাওয়ার দুঃখ, মেধা জানে না। সত্যি আজকাল সন্তানকে সঠিকভাবে মানুষ করা কি কঠিন কাজ।
একেকজনের একেকরকম সমস্যা।
ঈশিতার যেমন। টাটা ইন্টারেক্টিভ সার্ভিসেসের অত ভালো চাকরিটা ছেড়ে চলে আসতে হল।
মেধার ছোটবেলার বন্ধু ঈশিতা। চিরকালই মেধাবী। ছেলের জন্য কেরিয়ার ব্রেক নিয়ে বসে
ছিল। ছেলেটাও হয়েছিল তেমনি তুখড়। ওইটুকু বাচ্চা, কি না জানে। সাংঘাতিক বুদ্ধিমান
আর তেমনি দুষ্টু। সারাক্ষণ মাথায় কোনো না কোনো দুষ্টুমি ঘুরছে। আর অনর্গল কথা বলত।
যেখানেই যেত সকলকে মাতিয়ে রাখত। মেধাদের বাড়ি এসেছে অনেকবার। ঋজুদাদার সাথে বেশ
ভালোই জমত। এতদিন বাড়িতে বসে থাকার পর অপ্রত্যাশিতভাবে এত ভালো একটা চাকরি
পাবে ঈশিতা নিজেও ভাবে নি। পোস্টিং ব্যাঙ্গালোর। অরণ্যকে যখন বলল কথাটা অরণ্য বলল
"তুমি কি এখন ছেলেকে ছেড়ে ব্যাঙ্গালোর গিয়ে চাকরি করবে নাকি?" "না
তা কেন, তুমিও ট্রান্সফার নিয়ে নাও না," আদুরে গলায় বলল ঈশিতা। অরণ্য সাফ
জানিয়ে দিল ওর পক্ষে এই মুহূর্তে নিজের কেরিয়ার স্যাক্রিফাইস করা সম্ভব নয়। ঈশিতার
ও জেদ চেপে গেল। ক্লাস ওয়ানে পড়া ছেলেকে নিয়ে একাই পাড়ি দিল ব্যাঙ্গালোর।
কম্পানির দৌলতে কোনো
কিছুরই অসুবিধে হয়নি কিন্তু সমস্যা হল তাতানকে নিয়ে। অত প্রাণোচ্ছল, দুষ্টু ছেলে
হটাৎ করে অস্বাভাবিক শান্ত হয়ে গেল। শান্ত বলা ভুল, নিজেকে কেমন যেন গুটিয়ে নিল।
অত অনর্গল কথা বলা ছেলে কারুর সাথে কথা বলে না, মেশে না, এমনকি টি ভি র নেশাটাও
চলে গেছে। ওর স্কুলের টিচারের সাথেও কথা বলেছে ঈশিতা। উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন তাতান
ব্রাইট স্টুডেন্ট, ও ঠিক এডজাস্ট করে নেবে। এইটুকু বাচ্চা, নতুন পরিবেশে একটু সময়
তো লাগবেই।
একটু একটু করে ছ মাস কেটে
গেল। ছেলের কোনরকম উন্নতি না দেখে বাধ্য হয়ে ব্যাঙ্গালোরের নামি চাইল্ড
সাইকিয়াট্রিস্টের দ্বারস্থ হতে হল। মা ছেলের সাথে আলাদা করে কথা বলে ডঃ
কৃষ্ণমূর্তি যা বললেন তার সারমর্ম হল তাতান ওর বাবাকে মিস করে আর বাবার অভাবে নিরাপত্তাহীনতায়
ভুগছে। এর একটাই সমাধান, একসাথে থাকা, আর কোনো বিকল্প নেই। এত ছোট বয়স থেকে
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগলে ভবিষ্যতে আরো নানারকম মানসিক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
ঈশিতার বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। তাতানের ভিতরে এত কিছু চলছে ও কোনোদিন টের ও
পায়নি। রোজ রাতেই অবশ্য বাবাকে ফোনে বাবাকে একই প্রশ্ন করত "বাবা তুমি কবে
আসবে?" সেই ছোট থেকেই বাবা পাশে না শুলে তাতানের ঘুম হত না। সারাদিন ভুত
প্রেত, রাক্ষস, খোক্ষসের গল্প শুনত আর রাত হলেই জিজ্ঞেস করত " বাবা শক্তিশালী
তো? কেউ আমায় ধরতে এলে বাবা তাকে মারবে তো?"
সবকিছু শুনে অরণ্য বল টা
ঈশিতার কোর্টেই ঠেলে দিল। বলল "দ্যাখো কি করবে"। একবারও নিজে ট্রান্সফার
নেওয়ার কথা বলল না। ঈশিতাই পারল না। হাজার হোক, মা তো। ছেলের শৈশব, ছেলের ভবিষ্যৎ
সব নষ্ট করে স্বার্থপরের মত নিজের কেরিয়ার টা আর করতে পারল না। ফিরে আসতে হল
কলকাতায়। তবে এটাই আনন্দের কথা যে তাতান আবার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে।
আজকে এলে ভালো বোঝা যাবে। ভাবতে ভাবতে মেধা ঈশিতার নম্বর টা ডায়াল করল "কি রে
কখন আসছিস? দুপুর দুপুর চলে আয়, জমিয়ে আড্ডা মারা যাবে"। দুপুরে ভুরিভোজ করে
অবশ্য ঋজুবাবুর মন একটু ভরেছে। মা ঠিক ততটা খারাপ নয়। তারপর যখন শুনল তাতান আসবে
নিজেই সব খেলনা টেলনা বার করে রেডি করে রাখল। মেধারও মনটা খানিক শান্ত হল। ছেলের
মনটা তাহলে একেবারে বিশিয়ে যায়নি, এখনো আশা আছে।
দুপুরে মণি বাসন
মাজতে এলে মেধা বলল "এই আজ ঋজুর জন্মদিন, সন্ধ্যাবেলায় মেয়েদের নিয়ে আসিস।
রাতে এখানেই খাবি"। মণির বর ধনঞ্জয় আগে ওদের ফ্ল্যাটে কেয়ারটেকারের কাজ করত।
ফ্লাটেরই একজন ওকে 'লার্সেন এন্ড টুব্রতে' কন্ট্রাক্টে জে সি বি চালানোর কাজে
ঢুকিয়ে দেন। বেশ ভালোই মাইনে। কিছুদিনের মধ্যেই হটাৎ সে দুম করে আরেকটা বিয়ে করে
এনে হাজির। কিছুদিন সহাবস্থান, তারপরেই ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মনিকে বিদায় করে দিল। সেই
থেকে মনি লোকের বাড়ি বাড়ি কাজ করে দুই মেয়েকে মানুষ করছে। কত আর বয়স হবে, বড়জোর
পঁচিশ-ছাব্বিশ। মেয়েগুলো সকালে সরকারি স্কুলে পড়তে যায় আর বাকি সময় মায়ের হাতে
হাতে কাজ করে। রোজ দুবেলা ভালো করে খাওয়াও জোটে না। মেয়েগুলো বেশ চালাক চতুর।
ধনঞ্জয় এভাবে সংসারটা না ভাঙলে মেয়েগুলোর অনেক ভালো ভবিষ্যৎ হতে পারত।
সন্ধ্যেবেলা বৃহৎ কোনো
পার্টি হয়নি, নিতান্তই ঘরোয়া ব্যাপার। হাতে গোনা কয়েকজন নিকট আত্মীয়, বন্ধু বান্ধব
আর ফ্ল্যাটের কয়েকটা বাচ্চা। হই হই করে ভালোই কেটে গেল সন্ধ্যেটা। ঋজুর ও বোধহয়
খারাপ লাগেনি। মেধা আর আগ বাড়িয়ে কিছু জিজ্ঞেস করেনি। ওর মাথায় এখন অন্য চিন্তা
ঘুরছে। চারিপাশে শিশুদের কতরকম সমস্যা। নিজের ছেলের কথা, তাতানের কথা, মণির
মেয়েদের কথা, সবার কথা ভাবছে। আরেকজনও আছে। নীচের ফ্ল্যাটের কুহু। শুনেছে ওর মা
সাইকিয়াট্রিক পেশেন্ট। সিভিয়ার অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার। নিজের ছুঁচিবাই নিয়েই
ব্যস্ত। মেয়েকে ঠিকমত রান্না করে বা টিফিন করেও দিতে পারেন না। কুহু নিজেই ঋজুদের
কাছে দুঃখ করেছে ওর মা ওকে আদর করে না, ছোঁয় না, কাছে ঘেঁষতে দেয় না। মায়ের খাট,
বিছানা, বাসন পত্র, তেল, সাবান, শ্যাম্পু, পেস্ট সব আলাদা। ওদের ছোঁয়ার অধিকার
নেই। বাবা ভালোবাসেন কিন্তু কুহুর মায়ের অভাব মেটে না। একদিন নাকি কান্নাকাটি করে
বলেছে ওর বাড়িতে থাকতে ভালো লাগে না, ও বাড়ি থেকে পালিয়ে যাবে। ছেলে ধরা ধরে নিয়ে
গেলেও ভালো। আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি রাস্তায় বাস চাপা পড়ে মরে যায়। তাহলে হয়ত পরের
জন্মে ভগবান ওকে ভালো মা দেবেন।
ঋজু ঘুমিয়ে পড়েছে। সদ্য
পাওয়া লাল রেসিং কার টা প্রায় বুকে জড়িয়ে। মেধার মনটা একটু ভারাক্রান্ত। চারিপাশের
বাচ্চাগুলো ভালো নেই। এইভাবে ওদের শৈশব হারিয়ে যেতে দেওয়া যায় না। কিছু একটা করতে
হবে। ঋজু তো বড় হয়ে যাচ্ছে। সামনেই ক্লাস ফাইভ। মায়ের ওপর নির্ভরতা আরো কমবে, ও
হাতে আরো অনেক সময় পাবে। আচ্ছা, একটা এন জি ও খুললে কেমন হয়? শুধু শিশুদের নিয়ে
কাজ করবে, শিশুদের সমস্যা নিয়ে। মিডিয়ার প্রপাগ্যান্ড বা বিদেশী এড, ওসব চাই না।
নিঃশব্দে কাজ করবে, যথার্থ কাজ। বন্ধুবান্ধব মহলে তো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক,
মনোবিদ, উকিল সবই তো আছে। সবাই একটু একটু যদি সাহায্য করে। দ্বিধা কাটিয়ে অপূর্বকে
কথাটা বলেই ফেলল। অপূর্ব স্পষ্ট কথার মানুষ। শুনে বলল "যদি মনে কর করবে, কর।
ভেবে ভেবে সময় নষ্ট করো না। এগিয়ে চল, সামনে পথ ঠিক খুলে যাবে আর ভালো মানুষজনের
সাহায্যও ঠিক পেয়ে যাবে।" সারাদিন পরে মেধার মনটা একটু শান্ত হল। রাতে
শান্তিতে ঘুমোতে পারবে। সামনে অনেক কাজ।

No comments:
Post a Comment