Sunday, June 25, 2017

সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন - গৌতম সেন... কারীগরী সহায়তা --নূপুর বড়ুয়া


সম্পাদকীয় - গৌতম সেন

                                                    সম্পাদকীয়
           ঋতুচক্রের আবর্তনে এবার এল আষাঢ়। বাংলার দহনক্লান্ত মানুষ যখন কায়োমনবাক্যে বৃষ্টির বাসনায় মনে মনে প্রার্থনা করে চলেছে – আষাঢ়স্য প্রথম দিবসে না এলেও সে এল অবশেষে। বর্ষা এলো, ভিজল মাটি, ভিজল তৃষিত প্রাণ। খানিকটা হলেও ঘটল দাবদাহের অবসান। আসুন আমরা সেই প্রতীক্ষার অবসানে মেতে উঠি বর্ষা ধারাপাতে, সাদরে গ্রহণ করি তৃষাহরা বরষার হরষ বাণী।
        ইতিমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল বেরিয়েছে। প্রতিবারের মত চিলেকোঠা তার ঐতিহ্য অনু্যায়ী এগিয়ে এসেছে অনুষ্ঠানের ডালি সাজিয়ে। আগামী ৫ই জুলাই, ২০১৭ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ডঃ ত্রিগুণা সেন অডিটরিয়ামে বিকাল ৫টায় আয়োজন করা হয়েছে এ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়, চিলেকোঠার সদস্য-সদস্যার কৃতী সন্তানদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান। তৎসঙ্গে এই গ্রুপের সদস্যদের দ্বারা এক মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। আসন্ন এ অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলের সপরিবারে তথা সবান্ধব উপস্থিতি একান্ত কাম্য। এ অনুষ্ঠান সন্ধ্যা সাফল্যমন্ডিত হোক আপনাদের আন্তরিক যোগদানে।

        প্রসঙ্গান্তরে বলি, ‘চিলেকোঠা ই-ম্যাগ’ তার জয়যাত্রা অব্যহত রেখে চলেছে। যে কথা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য, বিভিন্ন কবি, লেখক তাদের সম্বৃদ্ধ রচনার নমুনায় ভরিয়ে তুলেছেন অতীতে, বর্তমানেও তাঁদের সে অবদান তথা তাঁদের এই স্বতঃস্ফুর্ত যোগদান অব্যহত রেখে এই ই-ম্যাগ কে উৎকৃষ্টতার স্বাদ উপহার দিয়ে চলেছেন। ‘চিলেকোঠা ই-ম্যাগ’ কতৃপক্ষ তাঁদের সকলকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। প্রতিমাসে নির্দিষ্ট সময়ে এর প্রকাশ সম্ভবপর হচ্ছে, তাঁদের লেখা কবিতা, গল্প, অনুগল্প, নিবন্ধ ইত্যাদি আমাদের কাছে এসে সময়মত পৌঁছচ্ছে বলে। আশা রাখব ঠিক এমনই আন্তরিক ও সাগ্রহ যোগদান ভবিষ্যতেও এই ই-ম্যাগ কে এগিয়ে নিয়ে যাবে আরও গুণগত উৎকৃষ্টতার শিখরে। সদস্য- সদস্যাদের কাছে অনুরোধ, আসুন সকলে এই প্রচেষ্টাকে আরও বেশি করে আপনাদের সমর্থন পুষ্ট করে তুলুন। চিলেকোঠার সমস্ত সদস্য –সদস্যাদের কাছে বিনীত আবেদন আপনারা এই পত্রিকায় প্রকাশিত বিভিন্ন স্বাদের রচনাগুলি পড়ুন, মতামত ব্যক্ত করুন। লেখক লেখিকারা যে উৎসাহ পাবেন শুধু তাই নয়, পত্রিকা নিজেও ঋদ্ধ হবে লেখক ও পাঠকের এই মূল্যবান সমন্বয়ের মাধ্যমে।
সকলকে শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও শুভেচ্ছা জানাই। বর্ষা ঋতুর মেঘ-মল্লারে মাতিয়ে তুলুন মন। পূব হাওয়াতে দিক দোলা সকল মনে।

স্বপ্নস্বরূপ - ৭ -- ন ন্দি নী সে ন গু প্ত





এলো আষাঢ়। দাবদাহক্লান্ত দিনের প্রতীক্ষার অবসানে আসে বর্ষা। এ ঋতুর  আবাহনমন্ত্র কবি লিখেছেন বিশেষ যত্নে। বলেছেন, সে আসে ‘নয়ন স্নিগ্ধ  অমৃতাঞ্জন পরশে’। তাকে প্রণাম জানাই। হে জগতের হিতকারী ঋতু, প্রণাম জানাই তোমাকে। যে ঋতুর আবাহনের মধ্যে নিহিত আছে জগতসংসারের ক্ষুন্নিবৃত্তির কথা, নিহিত আছে ফসল ফলাবার মন্ত্র, তাকে প্রণাম জানাতেই হয়। কবি সেই কারণেই বিশেষভাবে প্রণাম জানিয়েছেন বর্ষাকে। তবে আষাঢ় শব্দটির সাথে ‘আষাঢ়ে’ এই বিশেষণটিও যে জড়িয়ে আছে। কবির প্রাণে বেজেছিল সে কথা। তিনি বলেছিলেন, ‘কবিশেখর কালিদাস যে  আষাঢ়কে আপনার মন্দাক্রান্তাচ্ছন্দের অম্লান মালাটি পরাইয়া বরণ করিয়া লইয়াছেন তাহাকে ব্যস্ত লোকেরা ‘আষাঢ়ে’ বলিয়া অবজ্ঞা করে’  হয়তবা সেই ব্যথা ঢাকতে গিয়ে বাধ্যতামূলকভাবেই কবি আমাদের চেনালেন আষাঢ়ের স্বরূপ। বেজে উঠল,
‘রহিয়া রহিয়া বিপুল মাঠের ’পরে-
নবতৃণদলে বাদলের ছায়া পড়ে
‘বিপুল’ শব্দটির সুরের চলনের মধ্য দিয়ে শুধু খোলা প্রান্তর নয়, আষাঢ়ের আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘেদের বিস্তার ধরা পড়ল। ঐ একটা শব্দের মধ্য দিয়ে কবি যেন বন্দী করে ফেললেন আষাঢ়কে। আষাঢ় মানে যে খরাক্লান্ত হৃদয়ের সহস্রাব্দব্যাপী এক প্রতীক্ষার অবসান,  সেই বোধ এলো যখন বহুযুগের ওপার থেকে আষাঢ় আকাশে নয়, মনে আসার কথা বলেন কবি। আষাঢ়ের বজ্রপাত শুধু এক প্রাকৃতিক ঘটনা নয়, সে যেন মণিমাণিক্যে গাঁথা এক অপরূপ মালা।  
সজলঘন প্রকৃতির রূপের বিচিত্র বর্ণনা শুধু নয়, কবির মনে আষাঢ় যেন নিয়ে আসে একাকীত্বের বিষণ্ণতা, বিপন্নতা। একা হয়ে যাবার ভয়, কোনও প্রিয়মানুষকে হারিয়ে ফেলার ভয় খেলা করে বেড়ায় বিপুল জলধারায়। এক অদ্ভুত আর্তি মিশে থাকে আষাঢ়ের সাথে, যখন উচ্চারিত হয়, ‘ওগো, আজ তোরা যাস নে গো তোরা/ যাস নে ঘরের বাহিরে’।
একইসঙ্গে আষাঢ় টেনে বের করে নিয়ে আসে আমাদের অন্তরের শৈশবকে। আমাদের সবার মনেই যেন বর্ষার জমা জলে ভেসে বেড়ায় সেই কাগজ-নৌকাখানি। ‘বর্ষার চিঠি’ প্রবন্ধে নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ করছেন রবীন্দ্রনাথ... ‘মনে পড়ে, বর্ষার দিন আমাদের দীর্ঘ বারান্দায় আমরা ছুটে বেড়াতেম বাতাসে দুমদাম করে দরজা পড়ত, প্রকাণ্ড তেঁতুলগাছ তার সমস্ত অন্ধকার নিয়ে নড়ত, উঠোনে একহাঁটু জল দাঁড়াত, ছাতের উপরকার চারটে টিনের নল থেকে স্থূল জলধারা উঠোনের জলের উপর প্রচণ্ড শব্দে পড়ত ও ফেনিয়ে উঠত, চারটে জলধারাকে দিক্‌হস্তীর শূঁড় বলে বনে হত।’         

বর্ষার আগমনের উচ্ছ্বাস মানুষকে ভুলিয়ে দিতে পারে সব প্রয়োজনীয় কাজ। অতি গম্ভীর মানুষের মুখেও হাসি এনে দিতে পারে জলধারার উচ্ছলতা। মরুর দেশ, অনাবৃষ্টির দেশ, তারা কি দুর্ভাগা! তারা দেখেনি প্রকৃতির এই স্নেহের দান, দেখেনি এই উৎসবের আয়োজন। তাকে ঘিরে যুগ যুগ ধরে অজস্র কবি পাঠিয়েছেন আহ্বান। সব আহ্বানের মধ্যে কোনওদিন মলিন হয়ে যাবেনা বিশ্বকবির উপলব্ধি... ‘সকল কাজের বাহিরের যে দলটি যে অহৈতুকী স্বর্গসভায় আসন লইয়া বাজে কথার অমৃত পান করিতেছে, কিশোর আষাঢ় যদি আপন আলোল কুন্তলে নবমালতীর মালা জড়াইয়া সেই সভার নীলকান্তমণির পেয়ালা ভরিবার ভার লইয়া থাকে, তবে স্বাগত, হে নবঘনশ্যাম, আমরা তোমাকে অভিবাদন করি। এসো এসো জগতের যত অকর্মণ্য, এসো এসো ভাবের ভাবুক, রসের রসিক, আষাঢ়ের মৃদঙ্গ ঐ বাজিল, এসো সমস্ত খ্যাপার দল, তোমাদের নাচের ডাক পড়িয়াছে।’          

ছন্দবিহীন ডাকহরকরা - অনুপম দাশ শর্মা


.
       বহু পিছনে রয়ে যাওয়া দিগন্তভেদী

 স্মৃতিগুলো ভীষণ অমায়িক
ওদের পিঠে হাত রাখলে
       মেলে ধরে দশক পিছানো পরিবেশ
.
চোখের সামনে ভেসে ওঠে
              মেঘলা আকাশ, রাস্তার ধারে ল্যাম্প পোষ্টের
         তারে চুপ করে বসে আছে বয়স্ক কাক
  অদ্ভুত মায়ালোকে পৌঁছে যাই
.
          নিজেকে ফিরে পাই টিপটিপ বর্ষার চোখে
        কলেজের করিডোরে চিবুকে হাত রাখা
   অনিন্দিতা যেন উদাসী বাতাস
           পকেটে রাখা চার ভাঁজের টুকরো কাগজ
         যেন ঘুম কাড়া তন্বীর মেয়েলী অস্তিত্ব
.
          এসব ছবি শুধুই অবাধ্য কষ্টের ডাইরি
খুলে ধরে চোখের সামনে
         আনত চোখে আবার যে বর্ষা নামে-
            তার সংবাদ বহন করছে এখন এই আমি
            অক্ষরের এক ছন্দবিহীন ডাকহরকরা....

দহন - পিণাকী দত্তগুপ্ত



 মাঝেমাঝে তোমার কিছু কথা মনে পড়ে
 তোমার টিকালো নাক, সুগভীর চোখ, মোহময়ী মুখ
 আর অদৃশ্য কিশলয়- মন

 মাঝেমাঝে মনে হয় তোমাদেরও কথা
 গোল হয়ে ঘিরে বসা আগুন পোহানো কিছু রাত

রাত্রি আরো ঘন হয়ে এলে, বৃষ্টির শব্দ শোনা যায়
বৃষ্টিরা ধীরে ধীরে ঘিরে ধরে উপবাসী মন,
 ভিজে যায় মায়াবী শরীর

তারপর ঘুম আসে
তারপর বাতাসের অভ্রভেদী নেশা আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়
কতদিন দেখিনি তোমায়
 তোমাদেরও

আচ্ছন্ন ঘুমে বোজা চোখে, হঠাৎ দেখতে পাই
মেঘেদের বুক চিরে বৃষ্টি-ভেজা ষোড়শীর চাঁদ ভেসে আছে
তোমাদের গোল করে ঘিরে রাখা আগুনের আঁচ
নিবে গেলে, একে একে যুগপথ ঘরে ফিরে যাও

আমি জেগে থাকি একা বৃষ্টির সাথে
আর জেগে থাকো তুমি ভিক্টোরিয়ার পরী হয়ে
মেঘের ওপর থেকে চুপি চুপি দেখে চলো
 নগরের তীব্র দহন দেখে চলো, মেখে চলো...
দহনের তাপে পোড়া আমার জলজ উত্তাপ


Saturday, June 24, 2017

স্বর্ণালী শৈশব / গৌতম সেন


    এ এক ব্যস্ত জীবন ফাঁকে 
যখন মেলে কিঞ্চিত অবসর
ফিরে তাকাবার -
নজরে স্মৃতিরা আসে,
মালা হয়ে ঝোলে মনের গলায়।

উজ্জ্বল লাল পুঁতির মত
অমলিন শৈশব চকচক করে-
দামী লকেটের মত  
ওই পুঁতির মালায়।

সাদর আদরে বেড়ে ওঠা শিশুকাল
ফিরে ফিরে আসে,
সাগরের ঢেউ সে উত্তাল-
উড়ন্ত পাখিদের উড়ানের পিছু পিছু ছোটা,
মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন
কত বন্ধন।

কৈশোর এসেছিল তারপরে
তোড়জোড় ক’রে
যৌবনের আগমনী গেয়ে প্রাণভ’রে -
ক্ষণস্থায়ী তারা কোন সুখের ইন্ধন।

তবু বাকি এ জীবন কাহিনী
চাপা দিতে পারে নি, পারে নি ভোলাতে
এ অমূল্য সম্পদ – আমার সে স্বর্ণালী শৈশব।।


Friday, June 23, 2017

শুকিয়ে যাওয়া গলা - উৎসব দত্ত



গাড়ির হর্নের শব্দের সাথে ছেলের গলাটা শুনতে অসুবিধে হচ্ছিল
- কিরে কবে আসবি?
- কোলকাতায় একটা কাজ আছে সামনের সপ্তায় যেতে পারি দুদিনের জন্য তবে অফিসেই থাকতে হবে বাড়ি যাওয়ার সময় পাবোনা
- সেকি রে? তোর বাবা আর আমি তোর জন্য কবে থেকে অপেক্ষা করছি আসবি বলে? তোর জন্য রান্না করিনি কতো দিন বাড়িতে বাবাকে একবার দেখে দিয়ে যাস অন্তত
- বললাম তো সময় পাবোনা যাবো বলেও না যেতে পারলে কি লাভ?
- আসলে তোকে তো অনেক দিন দেখিনি রে খুব দেখতে ইচ্ছে করে
- তোমরা তো আমায় এই রকমই দেখতে চেয়েছিলে মোটা মাইনে নিয়ে বড় কোম্পানিতে চাকরি করব বাইরে বাইরে ঘুরব তখন কি একবারও জিগেস করেছিলে আমি কি চাইতাম?
প্রায় এক মিনিটের নীরবতা শুধু গাড়িটা হুশ হুশ করে বেরিয়ে যাওয়ার শব্দ
প্রায় এক বছর শয্যাশায়ী হয়ে যাওয়া বাবা ফোনটা কানের কাছে ধরে শুকনো গলায় বললেন
- বাবু তোর মা আর আমি ভালো আছি রে তোকে আর কষ্ট করে আসতে হবেনা তুই মন দিয়ে কাজ কর


ঘুষ - সুজয় চক্রবর্তী



--বলেছি যখন তোর ছেলেটাকে একটা না একটা কিছু করে দেবোই...
--হ্যাঁ ভাই, তাই যেন হয়।বেকার ছেলেটা আমার বড়ো মানসিক কষ্টে আছে রে, দেখে আমারও খুব খারাপ লাগে।হাজার হোক বাবা তো....
--তুই কিচ্ছু চিন্তা করিস না, আমি তো আছি, নাকি?
--না না, তোর ওপর আমার অগাধ বিশ্বাস...তুই আমার ছেলেবেলার বন্ধু।একসাথে কতো সময় কাটিয়েছি....তুই একটু দেখ ভাই, পার্টি লেবেলে তোর কতো জানাশোনা....আমি তোর কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো।
রাতে শুতে যাওয়ার আগে অভ্যাসবশতই অবনীবাবু আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছিলেন।আয়নায় নিজের মুখটার দিকে তাকিয়েই থ' হয়ে গেলেন।তিনি যেন স্পষ্ট শুনতে পেলেন, "এই শেষ বয়সে এসে ঘুষ...."!
অবনী সঙ্গে সঙ্গে মুখটা সরিয়ে নিলেন আয়না থেকে।কোনও দিন, কোনও কিছুর জন্যই কাউকে তেল মাখাননি তিনি।নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন।কিন্তু আজ একমাত্র ছেলে তমালের সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত তাকে তিন লাখ টাকায় 'রফা' করতে হল 'বন্ধু' মনোতোষের সাথে!!
অবসরের পর যে টাকা অবনী পেয়েছেন, তার পুরোটাই কবিতার বিয়ের জন্য রেখে দিয়েছেন ব্যাংকে।এখন.....
সকালে মায়ের কাছ থেকে খবরটা শুনলো তমাল।সারাটা দিন বাইরে বাইরে কাটিয়েছে কাজের খোঁজে।রাতে শুতে যাওয়ার আগে বাবাকে গিয়ে  বললো, "চাকরি যদি হয়, নিজের যোগ্যতায় হবে।নইলে ব্যবসা করে খাবো।তবু...."

তমালের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন অবনী।যেন আয়নায় নিজের মুখটা দেখতে পেলেন।

বর্ষাকালীন চুম্বন - প্রজ্ঞা পারমিতা ভাওয়াল



পরকীয়াতে মগ্ন মধ্যবয়স্ক প্রেমিক প্রেমিকার বর্ষাকালীন চুম্বন
মাঝপথে আটকে গেল
সুবিধে-অসুবিধে বোধে বন্দ

ঝড়ের আভাসে নিষেধের নামাবলী;
হুতাশে  মন উচাটন-
এক স্তব্ধ উপলব্ধি,
গোপন খামে সাজানো অক্ষর কবিতা হয়ে ওঠে।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের  পাতারা দোল খায়।
সেই বৃদ্ধ বৃক্ষ
সুমধুর, দুর্বোধ্য, গড়ন, পতন, আলিঙ্গনের, চুম্বনের, প্রেম অপ্রেমের সাক্ষী।

ঘরেতে আগল, হৃদয়ে শিকল , কুটিল জটিল হাসি
জ্যোৎস্না বিধ্বস্ত জীবন।
জীবন্ত লাশ,ম্লান মুখে দীর্ঘকায় স্বপ্ন;

যেদিন তাদের শান্ত অনুভুতি, উপলব্ধির ঋজুতায়
প্রেমহীন বুকের  শিখা  থরথর কাঁপা থেকে ত্রাস হীন স্থির।
আঙুলে আঙুলে কোলাকুলিতে
হৃদয় সিঁচে প্রেমের, শ্রদ্ধার, বিশ্বাসের ডানায় ভেসে
অতিক্রম করলো সেই জড়তা,
পরকীয়া প্রাণ পেলো ,

বোটানিক্যাল গার্ডেনের  পাতারা দোল খেলো ।

আবর্তন / সোমা দে





আর কোনো ভয় নেই -
থিতু হও অপার ছন্দে ,
    নি:শ্বাসে দীর্ঘ নীল সময় ....
        মাটিতে আঁচড় কেটেছিলে কবে ?

ফিরে যাও অন্ধ প্রেম ,

    এখন শুধু কাটাকুটি খেলা ;
        যে হেঁটেছিল নি:শব্দ জ্যোৎস্নায় -
            কফিনবন্দী নশ্বরতায় পোড়ে একলা !


         অলিতে-গলিতে , স্বপ্ন- রাজপথে ,
    তাড়া করে নির্বীজ কামুক ,
   সময়ও হতে চায় নির্ভার -
      বাবার সাথেও রাস্তা ধুকপুক ?


বেঁচে থাকে মৃত সময় ,
হানা দেয় ত্রস্ত কম্পন ,
   শেষ হয়েও রইল অবশেষ ...
  জীবন বুঝি আবার নন্দন !


"আর কোনো ভয় নেই "
ভয় নেই বুঝি আর? 
    ভুলে যায় লোভাতুর জীবন ;
           "ভিসুভিয়াস" ফিরে আসবে আবার !!

সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া

সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া