ফিরতে চায় লোকটি।
চার চাকায়, ধোপদুরস্ত
পোশাকে অমলিন,
ঠোঁটে চারমিনার,
অনেক পথ পরিক্রম করেছে
সে।
নিরলস বাতাস
ছুঁয়ে গেছে কেশ,
সকলকে পর্যুদস্ত করে
ফেলেছিল লোকটি।
এখন ফিরতে চায় সে।
মাটির উঠোন থেকে যাত্রা
শুরু হয়েছিল তার।
তারপর আস্তে আস্তে ইঁটের
গাঁথনি, পাকা রাস্তার সঙ্গে সেও পা রাখতে শুরু করে রঙ্গীন সিঁড়িতে।
হ্যাঁ, একেবারে পারছিল
না সে,
কিন্তু ধীরে ধীরে গরম
আগুনের মধ্য দিয়ে যেতে পেরেছে সে।
বদলে এসেছে সাফল্যের
শিখর।
লেলিহান আগুনের মতো
সভ্যতার বিস্ময় জড়িয়ে ধরেছে তাকে।লোকটিও মাঝে মাঝে ভাবত সে কি এই পৃথিবীর
রাজা?
আজ সময়ের কাছে ন্যুব্জ
লোকটি। সব পাওয়া হয়ে গেছে তার-বিলাসবহুল ঝাঁ চকচকে জীবন, স্বপ্নের উড়ান, নরম
লোভনীয় রমণীদেহ সব সব পেয়েছে সে। কিন্তু ভালোবাসা? না,শুধু এই জিনিসটাকেই জয়
করতে পারল না সে। কেউ তাকে ভালোবাসেনি। লোকটি জানে সে ব্যবহৃত হয়েছে। তার
প্রাচুর্যতায় প্রজাপতিরা কাছে এসেছে, কিন্তু তাকে আদর করে ভালোবেসে ছোঁয়নি কেউ!
আজ সে ক্লান্ত। সব
ফিরিয়ে দিতে চায় লোকটি।মায়ের মুখ বড়ো মনে পড়ে তার। এইসময় ভীষণ শারীরখারাপ করে
লোকটির। চোখদুটো ঝাপসা হয়ে আসে।
তার একলা আকাশ কানে
কানে বলে-
"চল, যাবি আমার সাথে?"
দিক হারানো নদী বলে-
"আর একটিবার
আয় না আমার পাড়ে!"
সবুজ বাতাস তাকে ছুঁয়ে
বলে-
"কিরে হাঁটবি না
আর মেঠো পথে?"
সে দেখে, দু'হাত বাড়িয়ে
মা ডাকছেন-
"আর একবার আসবি
বাবা?"
দু'হাতে মাথা চেপে বসে
থাকা লোকটি উঠেদাঁড়ায় এবার। প্রাণপণ শক্তিতে ছুটতে থাকে সে।
না, ফিরতে হবে
তাকে এবার।
ফিরতেই হবে।
No comments:
Post a Comment