Sunday, April 23, 2017

ধারাবাহিক গল্প / ফিরে দেখা / সুব্রত ঘোষ



বাবুলের বাড়ি পৌঁছে শুনলাম খুব চিৎকার হচ্ছে, প্রথমে মনে হয়েছিলো বুঝি পানীয়ের ফলস্বরূপ। পরে ভেতরে গিয়ে বুঝলাম ব্যপারটা অন্য মাত্রায় পৌঁছে গেছে। বিজয়ের প্যান্টের পকেটের মানি ব্যাগ থেকে ১০০০ টাকা  হাওয়া হয়ে গেছে। খুব হই চই চলছে, আর খোঁজা খুঁজি। বিজয়কে জিজ্ঞাসা করলাম কি করে বুঝলি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে। তখন আসিফ বলল, সব্বাই মিলে বিজয়কে খ্যাপানো চলছিলো ওর ব্যর্থ প্রেম নিয়ে, তখন আমি বললাম তোর বউয়ের ফটো আছে...দেখা আমাদের। বিজয় মানি ব্যাগ নিয়ে এলো বউয়ের ফটো দেখানোর জন্য। তখনই নজর করলো টাকা গায়েব। শ্বশুরবাড়ি আসবে বলে একটু বেশী টাকা এনেছিল তার মধ্যে দুটো ৫০০ টাকার নোট ছিল, সেই দুটোই হাওয়া হয়ে গেছে।সারা ঘর খোজার পরও পাওয়া গেলো না হদিশ, কোথায় বা কে নিলো মানি ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকার নোট দুটোএকবার কাশিদাকে জিজ্ঞাসা করলো আসিফ, তারপর এই ঘর ওই ঘর ঘুরে ব্যলকনিতে গিয়ে হঠাৎ আসিফ বলল, আচ্ছা রজত তোর মনে পরে ক্লাবে তুই দুটো সিগারেট নিয়ে যেতিস একটা প্যাকেটে, প্রথমে একটা ধরিয়ে প্যাকেটটা ফেলে দিতিস, খালি বলে বোকা বানানর জন্য। যদিও আর একটা সিগারেট থাকতো ওই ফেলে দেওয়া প্যাকেটে। আজ তোর সেই বুদ্ধি দিয়ে মনে হয় চোর ধরা পরবে। উঁকি দিয়ে নিচের দিকে দেখাল দুটো প্যাকেট পরে আছে। একটা ক্লাসিক ফিল্টার অন্যটা ফ্লেকের। ক্লাসিক ফিল্টার তো তুই খাস রজত, বলল আসিফ। আর ফ্লেক খায় কবীর, আমাদের মধ্যে তো আর কেউ সিগারেট খায় নাআচ্ছা কবীর তুই প্যাকেট ছাড়াই সিগারেট এনেছিলি বুঝি, জিজ্ঞাসা করে আসিফ।খানিক টা আমতা আমতা করে কবীর। আসিফ বলে চল তো নিচে যাই, বলে আমার হাত ধরে নিচে নিয়ে গেলো। খালি প্যাকেট দুটো হাতে তুলল। একটা ক্লাসিকের যেটা আমি ফেলেছিলাম, অন্যটা ফ্লেকের। ওই ফ্লেকের প্যাকেটটা খুলতেই ওঁর মধ্যে থেকে বেড়িয়ে এলো ১০০০ টাকা, ৫০০ টাকার দুটো নোট। আসিফ বলল, রজত তোর সেই বুদ্ধি আজ কাজে এলো, এইবার চোর ধরা পরবে। বলেই আমাকে নিয়ে আবার দোতলায় উঠলো। আমি সবে মাত্র গিয়ে পৌঁছেছি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কি করবো, যাই হোক আসিফের সঙ্গে উঠলাম দোতলায় যেখানে বাকি সব্বাই বসে আড্ডা মারছিল। আসিফ ওই ঘরে পৌঁছেই সবার উদ্দেশ্যে বলল,  একটা সত্যি কথা জিজ্ঞাসা করবো।বন্ধু হিসেবে জিজ্ঞাসা করতেও খারাপ লাগছে কিন্তু সেটা না করলে বোঝা যাবে না কে নিয়েছে বিজয়ের মানি ব্যাগ। আমরা সব্বাই চোরের ভাগিদার হয়ে যাবো, তাই নয় কি...সব্বাই কে জিজ্ঞাসা করলো আসিফ। সবাই মৌন হয়ে সম্মতি জানালো। এরপর আসিফ আস্তে আস্তে কবীরের কাছে এগিয়ে গেলোকবীরকে বলল সত্যি কথা বল তো কবীর টাকা তুই নিয়েছিস কিনা। দ্যাখ সত্যি কথা বললে এই ব্যপারটা নিয়ে আর কোন এগোবো না, নইলে আমি তো জানিস পুলিশের লোক, থানা থেকে পুলিশ ডেকে আনলে ব্যপারটা চাউর হয়ে যাবে, সেটা মনে হয় তোর বা আমাদের কারো সম্মানের জন্যই ভালো হবে না, বেশ দৃপ্ত কণ্ঠ্যে বলল আসিফ। আমরা সব্বাই খুব অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে একবার আসিফের দিকে আর একবার কবীরের দিকে। বেশ কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে থেকে একসময় খুব জোরে কেঁদে উঠলো কবীর। হ্যা, আমিই নিয়েছি বিজয়ের মানি ব্যাগ থেকে ৫০০ টাকার নোট দুটো, বলে কবীর। আর আমরা বিস্ময়ে হতবাক, নিজেদের দিকে দেখা দেখি করছি। ছোটবেলার বন্ধু কবীর আজ প্রায় ৩০ বছর পর সবার সঙ্গে দেখা, হয়তো অনেক পরিবরতনের মধ্যে দিয়ে আমাদের প্রত্যেকের জীবনের পথ একটু একটু করে আলাদা হয়ে গেছে, তবে এমন চুরি করার কি দরকার ছিল বুঝতে পারছিলাম না। ঘরের মৌনতা ভাঙল কবীর নিজেই। তোরা সব্বাই আমার ছোটবেলার বন্ধু, আজ অনেকদিন তোদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না, তাই আমার জীবনের বেঁচে থাকার লড়াই তোরা জানতে পারিস নি।বীমা করে যেটুকু টাকা উপার্জন করি তাতে সংসার চলে নারে। ভীষণ কষ্টের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে আমার জীবনসুযোগ পেয়ে ওই টাকা আমি নিয়েছিলাম, জানি ওই টুকু টাকায় আমার কষ্টের সুরাহা হবে না, তবুও ক্ষণিকের লোভ আমাকে ওই কাজ করিয়েছে। তুই কি এমন করে তোর কষ্টের সুরাহা করতে পারবি...জিজ্ঞাসা করে আসিফ। বিশ্বাস করতে পারছি না তোর মতো ছেলে এমন কাজ করতে পারে। তুই তো আমাদের কাছে খুলে বলতে পারতিস তোর সমস্যা। আমরা চেষ্টা করতাম যতটুকু করতে পারি। সেটা না করে কেন এমন কাজ করলি যা আমাদের সেই সম্পর্কে একটা কালির দাগ লাগিয়ে দিলো। আর সৃষ্টি করলো এক অবিস্বাসের বাতাবরণ। মাথা নিচু করে আসিফের কথা গুলো শুনছিল কবীরআসিফ বলে চলেছে, সময়ের স্রোতে আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে, কিন্তু ন্যুনতম মূল্যবোধ গুলো হারিয়ে যাবে রে? আজ আমরা সব্বাই এক জায়গায় এসে জড়ো হয়েছি সেই মূল্যবোধ ও আবেগ সম্বল করে। সেই জায়গায় তোর এমন আচরণ আমাকে ভীষণ ভাবে ব্যথিত করেছে। একটা নদী যেমন তার উৎস মুখে খরস্রোতা, সময়ের সঙ্গে তার গতি পথ নানা ভাবে পরিবর্তন হতে পারে, কিন্তু তার নিজস্বতা কি করে হারাবে? মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো, একরাশ ব্যথা নিয়ে দুর্গাপুর ছাড়ছি, আর কোনদিন দেখা হবে কিনা জানি না তবে ছেলেবেলার ভালোলাগা মুহূর্তগুলো যখনই মনে পরবে তখনই আজকের ঘটনাটা মনে মনে ব্যথিত করবে। তোরা আমাকে ঘেন্না করছিস দেখে আমার ভীষণ কান্না পাচ্ছে রে, আমি নিজের দোষ স্বীকার করে নিলেও এই কালি আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত লেগে রইলো, তোরা ভালো থাকিস, আর পারলে এই কুলাঙ্গার বন্ধুকে ভুলে জাস, বলে কাঁদতে কাঁদতে ঘরের বাইরে বেড়িয়ে গেলো কবীর। বেশ কিছুক্ষণ সব্বাই স্তম্ভিত হয়ে বসে রইলাম, কিছু পরে আসিফ জিজ্ঞাসা করলো কিরে খাওয়া দাওয়া করবি তো, ফিরতে হবে অনেক পথ। এমন ঘটনার ফলে দুপুরের ভোজন খুব ফ্যকাসে হয়ে গেলো। তার মধ্যেই পলাদির রান্না করা চিকেন কষা একটু যেন তৃপ্তি দিলো। খাওয়া শেষে আমাদের ফেরার পালা। আমার গাড়িতে ফেরার পথে আসিফ ছাড়াও অহনা বর্ধমান পর্যন্ত যাবে। শুভেচ্ছা বিনিময় করে গাড়িতে উঠে বসলাম। আমার পাশে অহনা, পেছনে আসিফ। গাড়ি চলতে শুরু করলো, কিছুক্ষনের মধ্যেই আসিফ ঘুমিয়ে পড়লো। অহনা চুপচাপ বসে বাইরের দিকে তাকিয়ে। আমি বললাম, কিরে কি ভেবে এসেছিলি, আর কি নিয়ে ফিরছিস?
অহনা বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো, তারপর বলল, আগে তোর মুখে শুনি,  তারপর আমি বলবো।এই যাত্রায় আমার আসা একদম তোর জন্য। যেদিন শুনলাম একটা মিলনউৎসব হবে আর তুই ও আসবি সেদিনই ঠিক করেছিলাম আমি আসছি, বললাম। শৈশব, কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের সন্ধিক্ষণে তোর চোখের আরশিতে আমার পৌরুষের ছবি দেখেছিলাম। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বেড়ে ওঠা, তবুও যেদিন থেকে তোর আর আমার মাঝে অভিভাবকদের নজর দেওয়াল তৈরি করেছিলো, সেদিন থেকে আমি অনুভব করতে শিখেছিলাম তুই নারী আর আমি পুরুষ। দুজনের মাঝে একটা সামাজিক প্রাচীর তৈরি করে দেওয়া হোল অভিভাবকদের নজর দিয়ে। তারপর থেকে দুজনেই লুকিয়ে একে অপরকে দেখেছি, অনুভব করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সাহস করে কাছে আসতে পারি নি। সেই না পাওয়ার ব্যথা আজও আমার মনের ভেতর একটা অন্ধকার জায়গা। হয়তো সেই অন্ধকারকে আলোর দিশা দেখানোর জন্য আমার এখানে আসা। জানি আমরা দুজনেই দুটো পরিবারের দায়িত্ব সামলাচ্ছি, তবুও একটা আকর্ষণ আমাকে নিয়ে এলো এতদূরে। অন্তত যে কথা টা গোপন ছিল, যেই অঙ্গীকার অপূর্ণ ছিল সেই কথা বা অঙ্গীকার ভুল না ঠিক সেটাকে যাচাই করা ছিল আমার আসার উদ্দেশ্য। গড়গড় করে কথা গুলো বললাম অহনাকে। দেখলাম ওর চোখ দুটো লাল, মুখটা কেমন উদাস, রাস্তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। কিরে কি দেখছিস, আর কি বা ভাবছিস তুই? দ্যাখ, প্রতি টা মানুষের চরিত্রে  একটা practical and emotional  সত্ত্বা আছে। দুটো বিপরিতধর্মী ,একে অপরের সঙ্গে সব সময়েই বিবাদমান। আমাদের প্রত্যেকের এই দুই বিপরতধর্মী সত্ত্বাকে নিয়ে চলতে হয়। আমি বলি  সুজন মাঝি আর মন মাঝি। সুজন হোল যুক্তিবাদী সত্ত্বা, আর মন অনুভূতি প্রবণ। সামাজিক জীবনের কর্তব্য পালন, ন্যায় অন্যায় বিচার বোধ, সমস্যা তার সমাধান, বাস্তব জীবনের সব ধরনের সাফল্য বা ব্যর্থতার নায়ক হোল সুজন। জীবনের সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনার বহিঃপ্রকাশ, মান অভিমান রাগ অনুরাগ মনের জন্য। এই দুই সত্ত্বাকে যেই মানুষ সুন্দর ভাবে নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারে সেই সুন্দর সফল পূর্ণাঙ্গ জীবন যাপন করে, বললাম আমি। তুমি কি সুন্দর সফল পূর্ণাঙ্গ জীবন যাপন করছ? জিজ্ঞাসা করলো অহনা। আংশিক সত্যি, বললাম। সামাজিক জীবনে আমি একজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ, পারিবারিক জীবন আছে, তবে তার মধ্যে যেই বেসুরো আওয়াজ রয়েছে সেটা সমাজের কানে পৌছয় না। কারণ আমি আমার সামাজিক সম্মান কে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। এই ক্ষেত্রে সুজন মাঝির প্রাধান্য, মনের থেকে দিতেই হয়, নইলে ওই যে বললাম সামাজিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হয়। যেটা পাই নি সেটার জন্য দুঃখ হয় কিন্তু দুঃখের বাড়াবাড়ি হওয়ার আগেই সুজন মনের ওপর নিয়ন্ত্রন নিয়ে ফেলে বুঝলি। যেমন আজ তোর সঙ্গে দেখা করার জন্য আমার আসা, মনের কথা শুনে কথা বলতে বলতে হথাৎ অহনা চিৎকার করে উঠলো…”আরে দাড়া দাড়া রজতদা, বর্ধমানের সীমানা ছেড়ে চলে যাচ্ছিস যে রজত একটু এগিয়ে  রাস্তার ধারে এসে গাড়ি থামালঅহনা নেমে যাবি? চল আমাদের সাথেহাসতে হাসতে বলল রজত
এদিকে হথাৎ ব্রেক করার ফলে আসিফ জেগে উঠেছে পেছনের সীটে সামনে চলে আয় রে আসিফ, বলল রজত অহনা গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো আসিফ এসে বসলো রজতের পাশে অহনা ঘুরে এলো রজতের দিকে, রজতের হাত তা একবার স্পর্শ করল, বলল ভালো থাকিস রজতদা, আমি আসছি, আসছে বছর আবার দেখা হবে কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যেই গাড়ি চালাতে শুরু করলো রজত লম্বা একটা হাই তুলে আসিফ জিজ্ঞাসা করলোকিরে ছোটবেলার প্রেম ঝালিয়ে নিলি বুঝি
তা অহনার নাম্বার তা নিয়েছিস তো, চিন্তার কি আছে, বি কানেক্টেড, ভাবিস না রে আবার প্রেম নতুন করে শুরু হবে……হাসতে হাসতে বলল আসিফ আসিফের কথায় রজতের হথাৎ খেয়াল হল কথায় কথায় বর্ধমান চলে এলো, অহনা নেমে পড়লো, ওঁর ফোন নাম্বার নেওয়া হল না না রে আসিফ, নাম্বার নিতে ভুলে গেছি, বলল রজত ধুর ধুর নাম্বার পাওয়া কি আর কঠিন কাজ বুঝি পলাদি বা যে কোন কারো কাছেই পেয়ে যাবি, আসিফ বললখানিক আনমনা হয়েই গাড়ি চালাতে চালাতে শাক্তিগড় এলো আসিফ বলল চল একটু চা খেয়ে নি, ঘুমটা কেটে যাবে চা খেয়ে গাড়ি চলল কলকাতার দিকে, দূর আকাশে নীলের গভীরতা, চারিদিকে সবুজের বন্যা তবু মনটা কেমন যেন উদাস হয়ে আছে নাহ এতা কি ঠিক হল, মনে প্রশ্ন এলো, নিজের সংযমের জায়গাটা কি শিথিল হয়ে পড়ছে না আসিফের সঙ্গে কথা বলা শুরু করলো রজত, অহনার রেশ কাতানর জন্য আসিফের সংসার, ছেলেদের ভবিষ্যতের চিন্তা, নানা কথা সুনতে সুনতে কলকাতা পউছে গেলো আসিফ কে নামিয়ে বাড়ি পৌঁছল গাড়ি পার্ক করে বাড়ি ধুকে ফ্রেশ হল রাধুদা এক কাপ চা দিল সেই চায়ের কাপ নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে বসলো একটা বেতের চেয়ার এ বিকেলের শেষ আলোর আভা আকাশে, কয়েক টুকরো মেঘ সেই আভায় লুটোপুটি খাচ্ছে, কি সুন্দর লাগছে ওই সাদা মেঘের দলকে। মনে পরে ছোটবেলায় মেঘের উড়ে যাওয়া কতো গভীরভাবে লক্ষ্য করতাম, বিশ্ময় হতো, মনে হতো যাই উড়ে ওদের কাছে। কতো স্বপ্ন ছিল মেঘের স্পর্শ পাওয়ার।চেরাপুঞ্জি ভ্রমণের সময় সেই মেঘের স্পর্শ পাব বলে আলাদা উত্তেজনা ছিল মনে। কিন্তু মেঘের স্পর্শ যখন পেলাম কোন শিহরণ বা অনুভূতি আমাকে স্পর্শ করলো না। মেঘ নিয়ে স্বপ্ন আমার সেই শেষ। আজ আর মেঘ আমাকে বিশেষ কোন অনুভূতি দেয় না। হয়তো একইরকম ভাবেই অহনা দূরে আছে বলে আমার ভাললাগার স্বপ্নটা এখনো সুন্দরভাবে রয়ে গেছে মনে। কাছে এলে মেঘের মতোই শেষ হয়ে যেতো ভাললাগার অনুভূতি। থাক, অহনার নাম্বার আর নেবো না কারো থেকে। এই যে দূরে থেকে অহনার ঘ্রান পাচ্ছি, একটা ভালোলাগা ছড়িয়ে আছে মনে, এতেই বেঁচে থাক অহনাচা শেষ হতে হতে অন্ধকার নেমে এলো। ঘরে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো রজত, কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে মনে নেই, রাধুদা রাতের খাবারের জন্য ডাকতেই ঘুম ভাঙ্গল। সকালের ফ্লাইট, চটপট ডিনার সেরে ঘুম। অহনার কথা থাক না শুধু মনের ভেতর, যেখানে কারো প্রবেশের অধিকার নেই, কোন আইন বা কোন সমাজের কানুন বিরক্ত করতে পারবে না, শুধু সেখানেই, নীরবে, নিভৃতে দূরে বহুদূরে শরীরের নাগালের বাইরে মেঘের মতোই
                                                            
                                                                 সমাপ্ত

No comments:

Post a Comment

সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া

সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া