স্বাধীনদের ছোট্ট শহরটার একপাশ দিয়ে কুল কুল করে বয়ে গেছে সুভদ্রা নদী। নদীর পাড় বরাবর নদীর সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে এগিয়ে গেছে কালো পিচের রাস্তা। আর রাস্তার অপর দিকে ছোট্ট শহর অজন্তা নগর। স্বাধীনদের বাড়ি থেকে সামান্য দু-তিন কিলোমিটার গেলেই পূর্ব পাকিস্তান সীমান্ত। ছোট্ট স্বাধীন বাবার কাছে শুনেছে আগে নাকি একটাই দেশ ছিল, এমনকি ওর
বাবা এই বড়িতে থেকেই সাইকেলে করে পাশের যে সাতক্ষীরা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেছে সেই সাতক্ষীরা এখন বিদেশ।
তখন জমি-জমার মালিকানা ব্যাপারটা সে বুঝত না। স্বাধীনের ধারনা ছিল তাদের ছোট্ট শহরটার আসে পাশে যত খালি জায়গা জমি পড়ে আছে তার কোন মালিক নেই, যে কেউ ইচ্ছে করলেই ওখানে একটা ঘর করে নিয়ে থাকতে পারে ।
এর একটা কারণও ছিল। সুভদ্রা নদী আর
তার সংলগ্ন রাস্তার মাঝখান বরাবর একটা লম্বা চর ছিল। আর
ঐ চরের জমিটাতে মাঝে মাঝেই কোন একটা পরিবার এসে একটা টালির চাল দেয়া ছিটেবেড়া ঘর তুলে নিয়ে থাকতে শুরু করত। স্বাধীনেরও খুব ইচ্ছে হত বড়
হয়ে সেও ওই নদীর ধারে একটা বাড়ি করবে তাহলে ওর
ঘুড়ি ওড়াতে খুব সুবিধা হবে। কারন স্বাধীনদের বাড়িটা ছিল রাস্তার অপর পাড়ে নদী থেকে একটু দূরে দখিন পাড়ায়। ওদের পাড়ায় সব বাড়িই ছিল পাকা দেয়ালের তবে বেশির ভাগই টিন কিম্বা এসবেসটসের চাল। পাড়ায় যারা বড়লোক বলে পরিচিত ছিল একমাত্র তাদের বাড়ির মাথায় ছিল পাকা ছাদ। তখন ঐসব পাকা ছাদ ওয়ালা বাড়িকে দালান বাড়ি বলা হত। আর একমাত্র নিতুদের বাড়িটাই ছিল পাকা দেয়ালের উপর খড়ের চাল। তবে ওদের বাড়িটা ছিল অনেকটা জায়গার উপর এবং বাড়িতে আম, জাম, কাঁঠাল ও
নারকেল গাছ ছিল।
স্বাধীন বাবার কাছে শুনেছে ঐ চরের উপর যারা বাড়ি করে তাদেরকে রিফিউজি বলে। ওরা নিজেদের দেশের দীর্ঘ দিনের বাড়ি ঘর ছেড়ে এপারে চলে আসতে বাধ্য হয়েছে। তবে একই এলাকায় বসবাস করলেও স্বাধীনরা যেহেতু ঐ গ্রামেরই পুরনো লোক দেশ ভাগ হওয়ার অনেক আগে থেকেই এখানে আছে তাই ওরা রিফিউজি নয়। আস্তে আস্তে ওদের মধ্যে অনেকে রাস্তার এপারে স্বাধীনদের পাড়ায় পাকা বাড়ি ঘর করে ওদের ঘনিষ্ট প্রতিবেশী হয়ে যেত। তখন ওদের সঙ্গে স্বাধীনদের কোন পার্থক্যই সে খুঁজে পেত না। তবু তার মাথায় এটা কিছুতেই ঢুকতো না
ওদেরকে বাঙ্গাল আর স্বাধীনদেরকে ঘটি কেন বলা হয়। আর মোহনবাগান ক্লাব যত খারাপ খেলুকনা কেন স্বাধীনদের বাড়ির সবাই মোহনবাগানকেই সমর্থন করে আর
একই রকম ভাবে ইষ্ট বেঙ্গল ক্লাব অত্যন্ত জঘন্য খেললেও ওরা কেন ইষ্ট বেঙ্গল ক্লাবকেই সমর্থন করে? এমনকি মুখের ভাষা বা
পুজা-পার্বণ ইত্যাদী কোন ব্যাপারেই এই অদৃশ্য প্রাচীরের দুই দিকে থাকা দুটি পাড়ার মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য ছিল না। স্বাধীনদের এলাকায় রিফিউজি হিসেবে যারা আসতেন তারা প্রায় সবাই খুলনা কিম্বা যশোরের লোক, তাই চব্বিশ পরগনার লোকেদের মতই তাদের মুখের ভাষাও একই। তবে পরে সে
লক্ষ্য করেছে যে অনেক রিফিউজির মুখের ভাষা বুঝতে ওর বেশ অসুবিধা হয়, শুনেছে ওরা নাকি নোয়াখালি, সিলেট, কিম্বা চট্টগ্রামের লোক।
এই কাহিনীর যখন শুরু তখন স্বাধীন দখিন পাড়া ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে ক্লাশ ফোরে পড়ে। স্কুলে তার অনেক বন্ধুর মধ্যে একজনের নাম ছিল হিমু। আর
এই হিমু ছিল তার খুবই ঘনিষ্ট বন্ধু। আসলে ওর ঐ
নামটি ওর ভারী পছন্দ ছিল, হিমুর আসল নাম ছিল হিমালয় সেনগুপ্ত। স্বাধীন ঐ নামের কাউকে আজ এত
বছর বয়স পর্যন্ত দ্বিতীয়টি পাইনি। হিমুর বাবাও একদিন ঐভাবে ঐ
চরে একটা ঘরে তুলেছিলেন। আর তখনই সে
হিমুকে দেখেছিল। ওদের দুজনেরই বয়স তখন নয়
দশ বছর হবে। সেই থেকেই ওরা বন্ধু হয়ে গেল।
স্বাধীন হিমুর কাছে শুনেছে ওর ঠাকুরদা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে এম এ
পাশ করে ওদেরই গ্রামের স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তাই ওদের বাড়িটা এলাকায় মাষ্টার মশাইএর বাড়ি বলে পরিচিত ছিল। হিমুর সেই ঠাকুরদা অবশ্য মারা গেছেন। পরবর্তী কালে হিমুর বাবা পরেশবাবুও কলকাতার জে বি
রায় আয়ুর্বেদ হাসপাতাল থেকে ডাক্তারী পাশ করে গ্রামে প্রাক্টিস শুরু করেন। তবে দেশ ছেড়ে এপার বাংলায় এসে অনেক চেষ্টা করেও তেমন কিছু সুবিধা করতে পারছিলেন না। অবশেষে ঐ
ছোট্ট শহরে গৃহশিক্ষকতা করে কোন রকমে সংসার চালাতেন। আর তারই মাঝে নতুন করে ডাক্তারী প্র্যাক্টিসের চেষ্টা শুরু করেন।
হিমুদের এমনও কোন কোন দিন যেত যেদিন ঠিক মত
দুবেলা খাবারও জুটতো না, কিন্তু হিমুর আত্মমর্যাদা ছিল এতোটাই প্রবল যে
সে কোন দিন সেটা কাউকে জানতেও দিত না। তবে স্বাধীন সেটা ওর চোখ মুখ দেখে বুঝতে পারতো, আর তখন সে
ওকে কিছু একটা বলে যেমন--আজকে আমার বাড়িতে চল, আমি কয়েকটা নতুন ডাকটিকিট পেয়েছি তোকে দেখাব, এসব বলে ওদের বাড়িতে নিয়ে যেত। তখন স্বাধীনের মা
সামান্য কয়েকটা চিড়ে বা
মুড়ির নাড়ু ওকে এনে দিয়ে বলত, এই নে
মুড়ির নাড়ু তৈরী করছি, তুই এলি ভালই হল
গরম গরম কয়েকটা খেয়ে দেখ তো কেমন হয়েছে?
কথায় বলে "misfortune never
comes alone"। একদিকে হঠাৎ সব কিছু ছেড়ে একেবারে রিক্ত অবস্থায় নতুন পরিবেশে এসে হিমুর দাদা সাগর পড়াশোনায় তেমন সুবিধা করতে পারছিল না
এদিকে আবার একটা দীর্ঘদিনের গোছানো সংসার ছেড়ে এসে নতুন পরিবেশে হিমুর ঠাকুমা রীতিমত মানসিক রোগী হয়ে গেল। মাঝে মাঝেই চিৎকার করে কেঁদে উঠত আর বলত- আমার সব গেল আমার সব গেল আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল। শুধু নিতুকে বড় ভালবাসতো। নিতুকে পাসে বসিয়ে বলত- জানিস আমাদের বাড়ির পাশ দিয়ে এমনই এক
নদী বয়ে গেছে তার নাম বেতনা নদী। এলাকায় আমাদের পরিবারের কত নামডাক ছিল। হিমুর ঠাকুরদা সেইযুগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম
এ বলে কথা! সবাই কত
মান্যি গন্যি করত...।, এই
পর্যন্ত বলেই হঠাৎ কাঁদতে শুরু করে দিত, আমার সব গেল আমার সব গেল, আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল।
এদিকে স্বাধীনের বড়
দাদা স্বরাজ সদ্য কলেজ পাশ করে বাবার ব্যবসায়ে বসেছে। কিন্তু তার যেন বাবার ব্যবসায় মন নেই। বরং বেলা দশটা এগারটা পর্যন্ত রাস্তা-ঘাটে ঘুরে বেড়ানোটাই যেন তার কাজ। ইতিমধ্যে স্বাধীন একদিন দূর থেকে লক্ষ্য করল, হিমুর দিদি তিস্তা স্কুলে যাওয়ার পথে হেলা বটতলায় দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক কি যেন খুজে চলেছে। স্বাধীন দেখে অবাক হয়ে গেল হটাৎ গাছের আড়াল থেকে তার নিজের দাদা স্বরাজ বেরিয়ে এসে এদিক ওদিক তাকিয়ে একটা ছোট্ট করে ভাঁজ করা কাগজ তিস্তার হাতে দিল, আর তিস্তা একটু মুচকি হেসে সেটা বই-এর ফাঁকে লুকিয়ে রাখল। সেই বয়সে স্বাধীন ব্যাপারটা তেমন কিছু না
বুঝলেও এটুকু বুঝেছিল যে
এটার মধ্যে এমন একটা গোপনীয়তা আছে যেটা প্রকাশ্যে পাঁচ কান করা উচিত হবে না।
স্বাধীন যথারীতি নিজের বাড়িতে আর পাঁচটা কথার মত হিমুদের বড়ির এইসব কথাও গল্পের ছলে বাবা, মা
এবং দাদার কাছে বলত। কিন্তু একটা জিনিস সে লক্ষ্য করত, ওর
বাড়ির লোকেরা ব্যাপারটাকে তেমন পাত্তা দিত না। বাবা চুপ করে থাকলেও মা তো
বলেই দিত, ওসব বাঙ্গালদের সঙ্গে বেশী মেলা মেশা করিস না। হিমু দুই একবার আমাদের বাড়িতে এল কিম্বা তুই ওকে দুই একটা বই দিয়ে সাহায্য করলি সেই পর্যন্ত ঠিক আছে কিন্তু তার বেশী নয়। তবে নিতু অবাক হয়ে গেল,ওর
দাদার ব্যবহার দেখে। দাদা রীতিমত ওকে শাসিয়ে বলল, তোর ওই বাঙ্গালদের বাড়িতে অত ঘন
ঘন যাওয়ার কি দরকার?
এরই মধ্যে একদিন হিমুর বাবা পরেশবাবু স্বাধীনদের বাড়িতে এসে হাজির। তার বাবা হেমন্তবাবু কথা দিয়েছেন,
ওদের বাইরের ঘরটা পরেশবাবুকে তার ডাক্তারীর চেম্বার করার জন্য ভাড়া দেয়া হবে। তবে ভাড়া এখন তেমন কিছু দিতে পারবেন না পরে প্রাক্টিশের পশার হলে আস্তে আস্তে বকেয়া সমেত ভাড়া শোধ করবেন। সেইমত দুই একটা চেয়ার টেবিল আর
কিছু ওষুধ পত্র নিয়ে সেখানে বসতে শুরু করলেন। প্রথম প্রথম বিফল মনোরথ হলেও আস্তে আস্তে দু-চারটে রোগী হতে লাগলো।
কিন্তু এই ঘর
ভাড়া দেয়া নিয়ে বাড়িতে কম ঝামেলা হল
না। স্বাধীনের মা কিছুতেই একজন বাঙ্গালকে ঘর
ভাড়া দেবে না। কিন্তু হেমন্তবাবু এলাকায় একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তিনি ভেবে দেখলেন বাইরের ঘরটা তো পড়েই আছে। তাতে যদি একটি পরিবারের কিছু উপকার হয় তো ক্ষতি কি?
এই ভাবে দু-তিন বছর কেটে গেল। স্বাধীনের হিমুদের বাড়ি যাওয়া এমনিতেই কমে গেছে। যদিও ওদের বন্ধুত্ব তেমনই অটুট আছে। এদিকে স্বাধীনের বাবার শরীরটা কদিন একদম ভাল যাচ্ছে না। শরীরটা আস্তে আস্তে এতোটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে যে
দোকানে বসা অসম্ভব। অথচ বড় ছেলের দোকানে বসার ব্যাপারে কোন মন নেই, ইদানিং স্বরাজের সঙ্গে তিস্তার মেলা মেশাটাও বেশ বেড়েছে। সেযুগে ছেলে মেয়েদের এমন অবাধ মেলা মেশার সুযোগ ছিল না। কিন্তু তারই মধ্যে দুজনকে একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় দেখা যেতে লাগলো। যদিও তিস্তা স্কুল ফাইনাল পাশ করে একটা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার চাকরী পেয়েছে। পরেশ বাবুরও এখন হাতযশের গুনে তার পশার বেশ কিছুটা জমে উঠেছে।
হটাৎ দেখতে দেখতে তিন চার বছরের মধ্যে চাকাটা যেন কেমন তিনশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেল। হিমুর বাবা এখন সংসারটাকে বেশ গুছিয়ে নিয়েছেন। এখন মাসে শ'দুয়েক টাকা আয়
তার অবশ্যই হয়। মেয়ে তিস্তাও মাসে পঞ্চাশ টাকা মাইনে পায়। নিতুদের বাড়ির কাছেই এক হাজার টাকা দিয়ে দুকাঠা জায়গাও কিনেছেন। ভগবান নিশ্চই মুখ তুলে চাইবেন আর ইচ্ছে আছে আগামী দু-এক বছর খানেকের মধ্যে একটা ছোট পাকা বাড়িও করতে পারবেন।
উল্টোদিকে স্বাধীনদের অবস্থা দিন দিন কেমন যেন অগোছালো হয়ে উঠছে। ইদানিং হেমন্তবাবু প্রায়শই শয্যাশায়ী থাকেন। স্বরাজ মাঝে মাঝে দোকানে যায় কিন্তু নিয়মিত ব্যবসার খোঁজখবর না রাখার ফলে কর্মচারীরা তাকে সহজেই ভুল বোঝাতে পারে এবং ঠকায়। কর্মচারীরা চুরি করার পর
যা হোক দশ বিশ টাকা স্বরাজের হাতে দেয়, সে সেটাই বাড়িতে এনে বাবার হাতে দেয়। তবে এরই মধ্যে সম্প্রতি পরেশবাবুর চিকিৎসায় হেমন্তবাবু যেন একটু স্বস্তি পেতে সুরু করলেন।
স্বাধীনের এখন সংসারের এসব ঝুট ঝামেলা বোঝার বয়স হয়েছে। তাই ওর বাবা যখন বিছানায় শুয়ে শুয়ে হটাৎ বলে ওঠেন আমার সাজানো বাগান শুকিয়ে গেল, তখন তার হিমুর ঠাকুরমার সেই আক্ষেপের কথা মনে পড়ে। কি
অসম্ভব মিল? অথচ ওরা তো
রিফিউজি নয়?
একদিন সন্ধ্যা বেলায় স্বাধীন ফুটবল খেলে ফিরছে, সঙ্গে হিমুও রয়েছে, হঠাৎ ওদের বাড়ির সামনে কাছে আসতেই শুনতে পেল, বাড়িতে কোন প্রচন্ড গোলমাল হয়েছে। একটু কাছে আসতেই কথাগুলো স্পষ্ট হ'ল। ওর মা চিৎকার করে বলছে, কতোবার বলেছিলাম বাঙ্গালদের ঘর ভাড়া দিও না, খাল কেটে কুমির এ্নো না। এখন হল তো? ছিঃ ছিঃ ছিঃ, এই ছিল আমার ভাগ্যে?
ভয়ে ভয়ে স্বাধীন আর হিমু ঘরে ঢুকে দেখে অবাক হয়ে যায়। স্বাধীনের দাদা স্বরাজ আর
হিমুর দিদি তিস্তা ঘরের এক কোনে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে। স্বরাজের পরনে অতি সাধারন একটি ধুতি আর পাঞ্জাবি এবং তিস্তার পরনে একটি টুক টুকে লাল শাড়ি, মাথায় এক
মাথা সিদুঁর। পাশেই পরেশবাবু মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছেন। বাইরের ঘর থেকে দুই একজন কৌতুহলী রোগীও দরজায় এসে ভীড় করেছে। ঘরে ঢুকে স্বাধীন আর হিমু ভয় পেয়ে গিয়ে বোকার মত ঘরের এক পাশে দাঁড়িয়ে রইল আর তখনও ওর মা চিৎকার করেই যাচ্ছে।
তখন হেমন্তবাবু কোনরকমে বালিশ থেকে মাথাটা একটু উঁচু করে বললেন, যাক, যা হয়ে গেছে সে তো আর
ফেরানো যাবে না, ওরা পরস্পরকে ভালবেসে কালী মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করে এসেছে এখন আমরা মেনে না নিলে সমাজে সবাই আমাদেরকেই ছিঃ ছিঃ করবে।
কিন্তু তাতে শৈলবালার চিৎকার যেন আরও বেড়ে গেল। খুব বড় বড় লেকচার তো দিচ্ছো তা একটা পরের বাড়ির মেয়েকে খাওয়াবে কি শুনি? এদিকে নিজেদেরই তো পেট চলে না।
কিন্তু তাতে শৈলবালার চিৎকার যেন আরও বেড়ে গেল। খুব বড় বড় লেকচার তো দিচ্ছো তা একটা পরের বাড়ির মেয়েকে খাওয়াবে কি শুনি? এদিকে নিজেদেরই তো পেট চলে না।
পরের বাড়ি কেন বলছো? ও তো আজ
থেকে আমাদের বাড়ির মেয়ে। হেমন্তবাবুর মুখে একথা শুনে পরেশবাবুর সাহস হ'ল একটু মুখ খোলার। তিনিও বললেন,
দেখুন বেয়ান, সম্পর্ক যখন একটা হয়েই গেল তখন আর ওসব নিয়ে চিন্তা করার কি
আছে। স্বরাজ এবার থেকে নিয়মিত দোকানে বসবে, তিস্তাও তো একটা চাকরী করে আর আমারও ত এখন মোটা মুটি ভালই চলছে এবং সেই সময় আপনারা এই ঘরটা না দিলে আমিও কোথায় ভেসে যেতাম বলুনতো? তাই আসুন না
সবাই মিলে আমরা নতুন করে আমাদের এই
সংসার দুটোকে আবার সাজিয়ে তুলি? যা মা গুরুজনদের প্রণাম কর।
একথা শুনে স্বাধীন আর হিমু দুজনে এক দৌড়ে বেরিয়ে গেল হিমুর মা
আর ঠাকুরমাকে ডেকে আনতে।
No comments:
Post a Comment