সম্পাদকীয়
স্বাগত ১৪২৪ সাল। শুরু হল নতুন বছর। বাঙালি মননে বৈশাখ মাস মানেই
রবীন্দ্র মাস। আর আছে হালখাতা। দোকানে দোকানে ভিড়। পাওনা বা অগ্রিম টাকা দিয়ে লাভ
হয় এক গ্লাস সরবৎ, একটি সুদৃশ্য ব্যাগে নতুন বছরে ক্যালেণ্ডার সহ এক বাক্স
মিস্টি। দিনের প্রচণ্ড দাবদাহে ক্লান্ত শরীরে, সন্ধ্যায় এক গ্লাস সরবৎ কিছুটা তৃপ্তি এনে দেয়। বৈশাখের
এই দাবদাহের মধ্যে কোথা থেকে এক ফালি মেঘ ভেসে এসে উত্তরবঙ্গকে কিছুটা স্বস্তি
দিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের আকাশও এখন মেঘলা। দুদিন আগেই হয়ে গেছে বছরের প্রথম
কালবৈশাখি। দক্ষিণবঙ্গের আকাশ এখন বেশীরভাগ সময়ই মেঘলা। মাঝে মাঝে খেজুর পাতার
ফাঁকে রোদের দেখা মেলে। পৃথিবীর মানচিত্রে বিচরণ করলে দেখা যাবে, সর্বত্র সমাজজীবনে চলেছে
অসহিষ্ণুতার এক মেঘলা পরিবেশ। সর্বস্তরে দেখা যাচ্ছে পান থেকে চুন খসলেই মারমুখি
জনতা। আবার এক শ্রেণীর মানুষ, সমাজকে করে চলেছে তোষণ বা শোষণ। এখন যেন মনে হয় এ সমাজ
যেন লাগামছাড়া। কেউ কাউকে মানতে চাইছে না। সবসময় একটা অহংবোধ কাজ করে চলেছে সবার
মনে। আর এই অহংবোধ সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখনকার বেশীরভাগ ইয়ং জেনারেশন
বয়স্কদের আর সম্মান প্রদর্শন করতে চায় না। তাদের প্রকাশ্য আচরণে বয়স্কদের মাথা
হেঁট হয়ে যায়। মনে হয় শালিনতা বোধ যেন দিন দিন লোপ পেয়ে যাচ্ছে। দুঃখের কথা, এখন ট্রেনে বাসে বয়স্কদের
জন্য আলাদা সিট লিখে রাখতে হয়। আমরা কি এই দিন দেখার প্রত্যাশায় বসেছিলাম। ভালবাসা, মমত্ববোধে এখন
স্বার্থপরতার লক্ষণ। মানুষ আজ বড় অসহিষ্ণু। পাহাড়প্রমাণ চাহিদা মেটাতে না পেরে
মানুষ আজ বড় হতাশাগ্রস্ত। আর এই হতাশাই একশ্রেণীর মানুষকে করে তুলেছে অসহিষ্ণু।
নিঃস্বার্থ ভালবাসা এখন বড়ই দুর্লভ। আসুন আমরা সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে
ভালবাসি। সবার নিঃস্বার্থ ভালবাসা ছাড়া একটা সুস্থ সমাজ গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। কবির
কথায় বলি, “মানুষ আজ বড় কষ্টে আছে, তোমরা মানুষ হয়ে মানুষের
পাশে দাঁড়াও”
।
No comments:
Post a Comment