কে একজন বলেছিল জীয়ন কাঠি মরণ কাঠি মনে পড়ে?
সংক্ষিপ্ত জবাবে বলেছিলাম - বেশ মনে পড়ে!
আর একজন বলেছিল পক্ষীরাজের কথা মনে পড়ে?
এ প্রশ্নেরও একই উত্তর ছিল আমার।
এমন 'মনে পড়া'-র হিসাব যদি খুলে বসি
শৈশব জীবন্ত হয়ে ওঠে।
দলে দলে রূপকথারা আজও
মিছিল করে আসে বোবা মনের রাজপথে।
মায়াময় কল্পনার তেপান্তরে।
এমনটা শুনে আবেগে আহ্লাদে
এও বলে কেউ কেউ - আহা সেসব দিন
হারিয়ে গেল কোথায়, আর কি আসবে ফিরে?
তাদের কে আর বলি নি -
হারাবে কোথায়? অবলুপ্ত নয় তারা।
তবে ধীরে ধীরে অপসৃয়মান রূপকথারা
আজ বড় কষ্টে আছে,
সেই সব ঠাকুমাদের ঝুলি ধূলিমলিন মাত্র।
রাক্ষস খোক্ষস - দৈত্য দানো
কিম্বা তেপান্তরের পক্ষীরাজের সওয়ার
রাজকুমার, বন্দিনী নিদ্রিতা রাজকুমারী
এত সহজে হারাবার নয়।
আজ তাদের গল্প শোনাবার মানুষ গেছে কমে
আজ শিশুরা গল্পঘুমে আচ্ছন্ন হয় না আর
ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে
দূরে, বহু দূরে সরিয়ে রাখা হল রূপকথা
কল্পলোকের গল্পকথারা আজ ব্রাত্য।
তারা আর আদরের ঠাকুমার মুখে শোনে না
ঠাকুরমার ঝুলি, নীলকমল লালকমলের
রোমাঞ্চকর জীবন। ঘুম তাদের আসে কেবল
মগজের চাপে । দিগগজানির ক্লান্তির ভারে।
রূপকথারা হারায় না
কল্পলোকের দরজা বন্ধ করে রাখা আছে
তাই স্বপ্নময় ঘুমের জগতে
কল্পনার ফসল ফলে না আর!
দিদা- ঠাম্মীদের গল্প বলা শেষ
ছোটদের ছোট ছোট চোখ বড় করে
গল্প শুনে ঘুমানোর দিন আজ শেষ -
তবু অযত্ন লালিত রূপকথাদের দল
আছে চুপ করে। গল্পঘরের গুদাম ঘরে।
বেচারা ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমী ভাবে, চুপিচুপি
বলাবলি করে - হায় কেন এমন হল!
No comments:
Post a Comment