Wednesday, January 18, 2017

বইমেলা পার্বণ তিলক কুমার ভট্টাচার্য



বাঙালীর উৎসবের ক্যালেন্ডারে নবতম সংযোজন বইমেলা। শীতকালে পৌষ সংক্রান্তি, বড়দিনের মতই এক অবশ্যপালনীয় পার্বণ। বইয়ের থেকেও খাবার বিকোয় বেশী। বইপ্রেমীর থেকে এমনি প্রেমী বেশী। ফেসবুকের গ্রুপমিট, কলেজপড়ুয়া দের বাজনা সহ মিট সবই আছে, শুধু বই দেখা বা কেনা ছাড়া। খবরের কাগজ পেতে গোল হয়ে বসে জমাটি আড্ডা, টপিক বইছাড়া অন্য সব কিছু। অবশ্য পাকা বই কিনিয়েরা কলেজ স্ট্রীট থেকেই কেনেন কারণ কমিশন বেশী। এখানে বাছেন ওখানে কেনেন। আর উপস্থিতির জানান দেওয়া সেলফি তুলে স্ট্যাটাস না দিলে ত জাতে নেমে যেতে হবে। বেশ অনেক বছর আগে ময়দানের বই মেলায় ভয়াবহ আগুন লেগেছিল। তখন আমার অফিস ছিল এভারেস্ট হাউসের ন তলায়। জানলা দিয়ে সেই আগুন আর কালোধোঁয়ার কুন্ডলী দেখেছিলাম। জীবনে কোন আগুন আমায় এত বেশী পোড়ায় নি। পরের দিন কাগজে বেরিয়েছিল শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ মাটিতে উবু হয়ে বসে একটা পোড়া বই তুলছেন। বড় মর্মস্পর্শী দৃশ্য। একবার বইমেলায় এক ভদ্রলোককে কে ধরা হল যিনি বেশ কয়েকটা বই তাঁর ব্যাগে ভরেছেন না বলে কয়েই। লক্ষণীয় হল বইগুলি সব একই বিষয়ের ওপর এবং গিল্ড অফিসে ধরে নিয়ে গিয়ে জেরা করার সময় ওই বিষয়ের ওপর ওঁর প্রগাঢ় জ্ঞান আছে বোঝা গেল। কর্তৃপক্ষ ওঁকে সসম্মানে মুক্তি দেন সাথে উপহারস্বরূপ বই গুলিও দিয়ে দেওয়া হয়। ইংরাজী পরিভাষায় এঁকে biblioklept বলে। সঠিক বাংলা নেই। আমার একে বইচোর বলতে বাধছে। নীতির বিচারে যাচ্ছি না কিন্তু আমার মতে বইমেলার উদ্দেশ্য র আঙ্গিকে এই biblioklept, বাকী মেলা দেখতে যাওয়া হুজুগে পাবলিক দের থেকে বেশী বরণীয়।


No comments:

Post a Comment

সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া

সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া