বাস
স্ট্যান্ডের পাশেই রিক্সা স্ট্যান্ড।
বাস থেকে একটু আগেই নামলো এক দম্পতী। এদিক ওদিক তাকিয়ে ভদ্রলোকটি
ঢুকলো একটা মিষ্টির দোকানে।
তখন থেকে স্ত্রীলোকটির দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে মিন্টু।
রিক্সার প্যাডেলে ওর পা। কেষ্ট মিন্টুকে হাড় হাভাতে চাওনি নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে
ফুট কাটলো, ' কেন বে, বউ কি
ইস্ট্রাইক করেছে?' কেষ্ট'র কথাতে ঘাড় ঘোরালো নীলুও।
মিন্টু ছোপ ধরা দাঁত বার করে বললো, ' না, ভাই, তা না, আসলে অনেক সুমায় একেক জনের দিকি
শুধু তাকায়েই থাকতি ইচ্ছে করে। কথা তো আর বলতি পারবো না...।'
অমনি কথাটা লুফে নিয়ে অমিতাভ বচ্চনের স্টাইলে নীলু বললো, 'তুই পারবি না, আমি পারবো। দেখবি, আমি ওদের দুজনের সঙ্গেই কথা বলে
আসবো?'
----- যা, পারলি
সিগারেট খাওয়াবো। চোয়াল শক্ত করে প্রতিজ্ঞার ভঙ্গিতে মিন্টু।
পিছন থেকে যুবতী স্ত্রীর স্বামীর ঘাড়ে হাত দিয়ে নীলু বললো, ' ভাই, কখুন আসলি? আমাদের বাড়ি যাস খুনি। বউমারেও নিয়ে যাস।'
ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো দুজনেই। এই সিনটার জন্য ওরা কেউই তৈরি ছিল
না। তারপর ঠোঁটে মৃদু হাসি রেখে আলতো করে ঘাড় নেড়ে পুরুষটি বললো, ' হ্যাঁ নীলুদা, যাবো। তোমরা সবাই ভালো তো?'
---- আর যাবি !....জানো বৌমা, ছেলেবেলায় তো চব্বিশ ঘন্টা ও
আমাদের বাড়িতেই পড়ে থাকতো....।'
পুরুষটি লজ্জায় তখন মাথা নিচু করে।
দূরে এ দৃশ্য দেখে মিন্টু, কেষ্ট'রা তো থ'। কি সহজেই সুবেশ পুরুষটির ঘাড়ে
হাত রেখে কথা বললো নীলু ! ঐ কালিঝুলি মাখা হাত!
মিন্টু সঙ্গে সঙ্গে কেষ্টকে সিগারেট কিনতে পাঠালো।
আসলে সুবেশ পুরুষটি হল নীলুর মামাতো ভাই। ওর নাম সুবীর। রেলের বড়ো
অফিসার। সঙ্গে ওর বউ। পুজোর ছুটিতে বাড়ি যাচ্ছে। চাকরি পাওয়ার পর থেকে সুবীর এই
রিক্সা স্ট্যান্ডটাকে পারতপক্ষে এড়িয়েই চলে।
আর যাইহোক, স্ট্যাটাস
মেইনটেন করতে গেলে তো আর রিক্সায়ালার ভাই হওয়া যায় না !!!
No comments:
Post a Comment