Friday, August 24, 2018
সম্পাদকীয় - / গৌতম সেন
"ভাদর আশিন মাসে, ভ্রমর বসে কাঁচা বাঁশে"... হ্যাঁ আষাঢ়-শ্রাবণ গেল, এসেছে ভাদ্র মাস। বর্ষা যদিও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রকৃতির বুকে। দাপট তার এবার এই ভারতবর্ষের বহু জায়গায় ইতিমধ্যেই এনেছে বন্যা বিপর্যয় – বিশেষতঃ দক্ষিণ ভারতের কেরালা। এক ভীষম প্লাবনের করাল ছায়ায় ভীত সন্ত্রস্ত সেখানকার অধিবাসী। আমাদের ঐকান্তিক শুভকামনা ও প্রার্থনা জানাই সেই সব বিপর্যস্ত মানুষের জন্য। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রাণহানি ঘটেছে সেখানে। শীঘ্রই অবস্থার সার্বিক উন্নতি কামনা করি।
সামনেই রাখী বন্ধন উৎসব, সৌহার্দ্যের বন্ধনে মৈত্রী ও প্রীতি ছড়িয়ে
পড়ুক সমগ্র মানবতার বিশাল জগতে। মাসটা এখন চারিদিকে তালের গন্ধে ম-ম করছে। তালের
নানারকম খাদ্য প্রস্তুত চলছে ঘরে, এর ঘ্রাণ, এর রসনা লোভন টান খাদ্যরসিক দলের মনে
যে সুমধুর তালবাদ্যের সুর তুলেছে তা বলাই বাহুল্য।
যাক হালকা মনে খানিক গল্পগাছা হল। এবার কিছু অতি প্রয়োজনীয় আলোচনাটা
সেরে ফেলা যাক। এই চিলেকোঠা ই-ম্যাগ নয় নয় করে বছর পাঁচেকের ও দীর্ঘ সময় ধরে তার
যাত্রা অব্যহত রেখেছে। অতএব একে চালিয়ে নিয়ে যাবার এক গুরু দায়িত্ব এই গ্রুপের সকল
সদস্য/সদস্যার ওপর ই সমান ভাবে বর্তায়। আসুন আরো বেশি সংখ্যায় এখানে আমাদের
সৃষ্টিকর্ম প্রকাশ করি আমাদের এই মাসিক মুখবন্ধটিতে। এবারো বেশ ভাল সংখ্যায়
কবি/সাহিত্যিক বন্ধুদের কাছ থেকে তাদের রচনা জমা পড়েছে – যা দিয়ে সেজে উঠেছে
প্রতিবারের মতই এবারের চিলেকোঠা ই-ম্যাগ।
পড়ুন, পড়ান, মতামত জানান – এর দ্বারা এই পত্রিকাটি প্রাণ ফিরে পাবে
আর যারা লেখা দিয়ে আমাদেরকে সহযোগীতা করলেন তাঁদের প্রতি যোগ্য সম্মান আমরা দেখাতে
পারব।
ভাল থাকুন সবাই। সুস্থ থাকুন। আনন্দে থাকুন।
ধারাবাহিক / স্বপ্নস্বরূপ – ২১ / ন ন্দি নী সে ন গু প্ত
‘আমায় তুমি করবে দাতা
আপনি
ভিক্ষু হবে,
বিশ্বভুবন মাতল যে তাই
হাসির
কলরবে।
তুমি রইবে না
ওই রথে,
নামবে
ধুলাপথে,
যুগযুগান্ত আমার সাথে
চলবে
হেঁটে হেঁটে’... কোনটি শ্রেয়? দাতা? না
কি দান? ভাবিয়ে তোলেন রবীন্দ্রনাথ।
স্বার্থহীন দান দুর্লভ হয়ে আসা এই পৃথিবীতে, মূল্যবোধ বদলে যাওয়া পারিপার্শ্বিক
সবকিছুর মধ্যে দাঁড়িয়ে এখনও কি মনের তন্ত্রীতে কোনো অনুরণন তোলেনা এই কথা...
‘তোমায় কেন দিইনি আমার সকল শূন্য করে?’ -অবশ্য যা দেওয়া যায়, তাইই ফিরে আসে সোনার
কণা হয়ে-- পঙক্তিতে এই বিশ্বাস জাগিয়ে তোলেন কবি। আসলে তিনি যে শুধুই মনের কথা মন
ভুলিয়ে আর ছন্দ মিলিয়ে লেখা কবি নন, তিনি ঈশ্বরের বার্তা ছড়িয়ে দেন কবিতায় গানে।
তিনি বলেন ‘অসীম ধন’এ ধনী হয়েও যিনি ‘চিরভিখারি’- সেই মহিমাময়ের কথা। বলে ওঠেন ঠিক
কখন দানের চেয়েও শ্রেয় হয়ে ওঠে দাতার স্পর্শ,... ‘কেন রে তোর দু হাত পাতা—/ দান তো না চাই, চাই যে দাতা,...’। কবি মনে করিয়ে দেন যে অজস্র দান পেয়েও আমরা হেলায়
হারাই, কারণ সহজ সাদা দৃষ্টিতে সে দান চোখে পড়েনা।
সতর্ক করে দিচ্ছেন তিনি,
‘সহজ হবি সহজ হবি ওরে মন, সহজ হবি—
আপন বচন -রচন হতে বাহির হয়ে আয় রে কবি।’ কবি যেন উর্ণনাভের
মত জড়িয়ে না পড়েন আপন জালে, তাই কি এই সতর্কতাবাণী? মনে করিয়ে দেওয়া অহর্নিশ, যা
পেয়েছ, সে তোমার নিজের নয়। অন্য কারো দান। যে হাতে তিনি দিয়েছেন, হয়তো অন্য হাতে
অন্য কোনো মুহূর্তে কেড়ে নেবেন তিনি। তাই কবি যেন জড়িয়ে না পড়েন নিজের পঙক্তির
মায়াজালে।
ঐশ্বরিক দান ছাড়াও মানুষ
মানুষের সঙ্গে জুড়ে থাকতে পারে আত্মিক আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে। যখনই এই আদান-প্রদান
বন্ধ হয়ে যায়, সেই জায়গায় মানুষ বড় একা। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আদায়ের সংকট তিনি
প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং বুঝতে পেরেছিলেন যে পারস্পরিক আদান-প্রদান বন্ধ হয়ে
ভারতবর্ষ এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত একা এবং এই সংকটকে তার স্বরাজের থেকেও বেশি গুরুতর
বলে মনে হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা
সকলের থেকে দূরে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিদ্যার নির্জন কারাবাসে রুদ্ধ হয়ে থাকতে চাই। কারারক্ষী
যা দয়া করে খেতে দেবে তাই নিয়ে টিঁকে থাকবার মতলব করেছি। এই বিচ্ছিন্নতার থেকে ভারতবর্ষকে
মুক্তিদান করা সহজ ব্যাপার নয়। সেবা করবার ও সেবা আদায় করবার, দান করবার ও দান গ্রহণ
করবার সম্বন্ধকে আমাদের তৈরি করে তুলতে হবে। বিশ্বের জ্ঞানজগৎ থেকে ভারতবর্ষ একঘরে
হয়ে আছে, তাকে শিক্ষার ছিটে-ফোঁটা দিয়ে চিরকেলে পাঠশালার পোড়ো করে রাখা হয়েছে। আমরা
পৃথিবীর জ্ঞানধারার সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই আধ্যাত্মিক ও বুদ্ধিগত অবমাননা থেকে মুক্তি
পেতে চাই।’ এই সংকট থেকে ভারতবর্ষ এখনও মুক্ত
হতে পারেনি। স্বরাজ এলেও সেই ‘একঘরে’ অবস্থা থেকে ভারতবর্ষ কতখানি বেরিয়ে আসতে
পেরেছে? এই না পারার অন্যতম কারণ হল আত্মিক আদান- প্রদানে সদিচ্ছার বিশেষ
অভাব।
ঐশ্বরিক এবং আত্মিক
দানের প্রসঙ্গ ছাড়াও, সবরকম দেওয়ানেওয়ার ব্যাপারে দেখতে পাই তার এক বিশেষ মত। তিনি
সমাজবেত্তাও বটে। বলেন, ‘বাইরে যেখানে দাবি সত্য হয়,
অন্তরে সেখানেই দানের শক্তি উদ্বোধিত হয়ে ওঠে। দানের সামগ্রী আমাদের থাকলেও আমরা দিতে
পারি নে, সমাজে যতক্ষণ প্রত্যাশা না সজীব হয়ে ওঠে।’ জাগতিক দান এবং
সমাজের মঙ্গলসাধন- এইসব ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের
নিজস্ব কিছু মত ছিল এবং আশ্চর্যজনকভাবে দেখতে পাই পাশ্চাত্যসমাজের মত দল বেঁধে
চাঁদা তুলে দান করবার বিপদের ব্যাপারে তিনি সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তার মনে হয়েছিল
যে এতে মঙ্গল কিংবা হিতচিন্তার চেয়ে শ্লাঘা প্রদর্শন বেশি গুরুত্ব পাবে। তিনি
বলেছিলেন, ‘চারি দিকেই দল বাঁধিয়া উঠিতেছে, কিছুই নিভৃত এবং কেহই গোপন থাকিতেছে
না। নিজের কীর্তির মধ্যেই নিজেকে কৃতার্থ করা, নিজের মঙ্গলচেষ্টার মধ্যেই নিজেকে পুরস্কৃত
করা, এখন আর টেকে না। শুভকর্ম এখন আর সহজ এবং আত্মবিস্মৃত নহে, এখন তাহা সর্বদাই উত্তেজনার
অপেক্ষা রাখে। যে-সকল ভালো কাজ ধ্বনিত হইয়া উঠে না আমাদের কাছে তাহার মূল্য প্রতিদিন
কমিয়া আসিতেছে…’— অর্থাৎ তিনি সেই যুগসন্ধিক্ষণের সাক্ষী ছিলেন যেখানে মানুষ ভুলতে
বসেছিল এই আপ্তবাক্য যে, কারো ডানহাত দান করলে সে খবর বামহাত অবধি পৌঁছাবেনা। মানুষ
শুধুই নিজের আত্মিক উন্নতির জন্য এবং অপরের মঙ্গলের জন্য দান করেনা, এ জিনিস তিনি পাশ্চাত্যে
দেখেছিলেন, এবং সেই হাওয়া তখন প্রাচ্যেও এসে লেগেছিল এবং সেই হতাশা তিনি গোপন করতে
পারেননি। যদিও অন্তর্নিহিত বিশ্বাস ছিল যে একদিন ভারতবর্ষ মঙ্গলচিন্তার পথে, হিতচিন্তার
মূল পথে ফিরে আসবে।
দান বড়, নাকি দাতা, এই বিতর্কে
প্রবেশ না করেও একটা কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে ভারতবর্ষ তথা বিশ্বকে রবীন্দ্রনাথ
যে সম্পদ দান করে গিয়েছেন, তার মূল্য নির্ধারণ করা এককথায় অসম্ভব। তারই কথায় বলতে পারি…
-- ‘তবু কি ছিল না তব সুখদুঃখ যত,
আশা নৈরাশ্যের দ্বন্দ্ব আমাদেরি মতো,
হে অমর কবি! ছিল না কি অনুক্ষণ
রাজসভা-ষড়্চক্র, আঘাত গোপন?
কখনো কি সহ নাই অপমানভার,
অনাদর, অবিশ্বাস, অন্যায় বিচার …
… জীবনমন্থনবিষ নিজে করি পান
অমৃত যা উঠেছিল করে গেছ দান।’
কবিতা / যেখানে ময়নাতদন্ত হয় না / অনুপম দাশশর্মা
এখন রাতের কোন গভীরতা নেই
যে-কোন মুহূর্তে নেমে আসে বজ্রনির্ঘোষ
আদেশ মহামহিমের।
যে-কোন মুহূর্তে নেমে আসে বজ্রনির্ঘোষ
আদেশ মহামহিমের।
রাতভর
জেগে সকালে আর্তনাদকে সঙ্গী
করে দিনের নামতায় এগিয়ে যাওয়া
করে দিনের নামতায় এগিয়ে যাওয়া
মধ্যরাতে আচমকা মোড় নেয়
সার্বভৌমিত্ব, বেড়ে ওঠে রক্তচাপ
না-জানি কোন ঘোষণায় এক লহমায়
ঘটে যাবে স্বদেশে সহজ নিয়মের
যবনিকাপাত।
সার্বভৌমিত্ব, বেড়ে ওঠে রক্তচাপ
না-জানি কোন ঘোষণায় এক লহমায়
ঘটে যাবে স্বদেশে সহজ নিয়মের
যবনিকাপাত।
বাতাসে গুপ্ত রসায়ণের খবর ছড়াতে-ই
মাঠে নেমে পড়ে চিল-শকুন।
মাঠে নেমে পড়ে চিল-শকুন।
দেশবাসী পরম সহ্য-সাধক
খাদের কিনারায় এসে-ও ভোলে না তুলতে
সর্বনাশী সেলফি।
খাদের কিনারায় এসে-ও ভোলে না তুলতে
সর্বনাশী সেলফি।
কবিতা / ভোরের বাসনা / গৌতম সেন
ভোরকে দেখলাম এক অপার উচ্চতায়
সময়কে হাতের মুঠিতে ধরে
পৃথিবীর দোলে। আকাশের কোলে।
এমন সন্ধিক্ষণে গান মনে এল
লাল রঙে দোলা দিল ধীরে ধীরে
যে ললিত ভৈরবী, তারই সুরলোক
নির্বাক, নীরব এক প্রত্যুষ রচনা করে রোজ-
সময়ের এমন দোলাচলে এ কথাটা
জানা হয়ে গেলো।
ভোরের এই আদি তৎসম রূপ এত কাছ থেকে
দেখা হয় নি তো আগে কোনও দিন।
যদি থাকতে আজ পাশে, দেখা হয়ে যেত
আকাশের বুকে এঁকে রাখা সলাজ ভালবাসা মাঝে,
সদ্যোজাত ভোরের আভাষ - ভোরের আকাশ কুসুম।
ঘরে ফেরার পালা, সেই সুবাদে আনন্দ ছড়ায়
আকাশ । আনন্দপুরীতে আজ প্রভাতের আগমনী
বাজে নিরুদ্দেশের কুয়াশা ছিঁড়ে কুটিকুটি করে-
তাকে বরণ করে ঘরে ফেরা
পাখিটার ডানার আওয়াজ।
ঘরে ফেরার ডাক মিশেছে আজ
নীলাভ আকাশে রাঙা আলোর মাঝে -
পরদেশে যা ছিল মনখারাপির পিছুটান,
আজ এতদিন পরে মন পেল খুশির খোজ।
মনে হল এতদিন পরে
এসেছি তোমার না থাকার খুব কাছাকাছি ঠিকানায়।
পথ চলার শরিক হবার দিলাম তোমায় ডাক।
ভালবাসার অনুভুতি থাকে থাকে সাজান সিঁড়ি
এখনও প্রতীক্ষায়।বাস্তবের অনুমোদন উপেক্ষা করে
এই দৈবিকক্ষণে, মনে মনে পথচলা শুরু
আকাশের গায়ে লেগে থাকা রঙের মেলায়।
রবীন্দ্র-কাব্যে বর্ষা /--অরুণ চট্টোপাধ্যায়
২৫শে বৈশাখ থেকে ২২শে শ্রাবণ। দূরত্ব কতটা? ক্যালেন্ডারের হিসেবে
যাই হোক,
পথটা কিন্তু মাত্র কয়েকটা মাসের নয়। মাত্র একটি বছরের মধ্যে
এক বিশাল
প্রতিভাকে সীমাবদ্ধ করে রাখা যায় নি। লেগেছে প্রায় সুদীর্ঘ
আশিটা বছর। প্রায়
একটি শতাব্দী।
“আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে—
তুমি জান না, আমি তোমারে পেয়েছি অজানা সাধনে।।
সে সাধনায় মিশিয়া যায় বকুলগন্ধ,
সে সাধনায় মিলিয়া যায় কবির ছন্দ—
তুমি জান না, ঢেকে রেখেছি তোমার নাম
রঙ্গীন ছায়ার আচ্ছাদনে।।“
বাইশে শ্রাবণের এক মন খারাপ করা ‘ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিনে’ একমনে
কবির কথা
ভাবুন। ভুলে যাবেন ২২শে শ্রাবণের কথা। মনে এসে যাবে ২৫শে বৈশাখের
সেই ‘ক্ষণ’
মুহূর্ত। নিদাঘ দিনের ঘাম ঝরাণ খটখটে মহাপ্লাবণের এক দিনের
কথা। সেই দিনটাও
ছিল এক ‘‘ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিন’। তবে সেদিন আকাশ থেকে ঝরে
পড়েছিল
প্রতিভার এক ‘স্নিগ্ধবারি’। সুদীর্ঘ আশি বছর ধরে সে ঝরেছে আর
আমাদের হৃদয় আর
মনকে করেছে স্নিগ্ধ। করেছে সিঞ্চিত।
প্রতিভার শুরু আছে শেষ নেই। কেননা শেষ হলেও যে তার রেশ থেকে
যায় জন্ম থেকে
জন্মান্তরে। ১৯৪১ সালটা গড়াতে গড়াতে ২০৪১ সালের দিকে চলল। আর
চলবে আর
চলবেই। তার গড়িয়ে যাওয়ার পথে খুঁজে পাওয়া যাবে না কোথাও কিন্তু
বাইশে শ্রাবণের
অস্তিত্ব। দেখা যাবে সর্বত্রই শুধু ২৫শে বৈশাখ গান করে চলেছে।
জীবনের গান,
হৃদয়ের গান, মানুষের গান, প্রকৃতির গান---এই মহাবিশ্বের গান।
“ আকাশভরা সূর্য- তারা, বিশ্বভরা প্রাণ,
তাহারই মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান ।“
প্রকৃতিই হল জীবজগতে মহা উৎস। আর তাই কবি গেয়েছেন সারা বিশ্বকে।
বন্দনা
করেছেন এই সীমাহীন ব্রহ্মান্ডের। এই বিশ্বব্রহ্মান্ডের কাছে
তিনি কৃতজ্ঞ আর
তাই অবাক হয়ে ভেবেছেন বিশাল এই বিশ্বের মাঝে একটি মানুষের কতই
না ক্ষুদ্র এক
অবস্থান। কিন্তু যত ক্ষুদ্রই হোক বিশ্ব কিন্তু ফেলে দেয় নি
এই ক্ষুদ্র
ব্যক্তিসত্বাকে। স্বীকার করেছে তার অস্তিত্বকে আর পালন আর পোষণ
করেই
চলেছে।
বিশ্বের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে আমাদের। করে নিতে হবে একাত্ম।
তাই কবি লিখলেনঃ
“আজ সবার রঙে রঙ মিশাতে হবে।
ওগো আমার প্রিয়, তোমার রঙিন উত্তরীয়
পরো পরো পরো তবে।।“
কবি ছিলেন সাংঘাতিক প্রকৃতিপ্রেমী। ছটি ঋতুর সুন্দর সুন্দর
বর্ণনা তাঁর অসংখ্য
গানের মধ্যে দিয়ে পাওয়া যায়। তিনি এমন সুন্দর বিজ্ঞান সম্মত
ভাবে রূপগুলিকে
ব্যাখ্যা করেছেন গানের মাধ্যমে যে তা সত্যিই অতুলনীয়।
বৈশাখের তাপঝরা পৃথিবী যখন তৃষ্ণার্ত হয়ে উঠেছে প্রবলভাবে তখন
কবি লিখলেনঃ
“চক্ষে আমার তৃষ্ণা ওগো, তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে।
আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন, সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে।।“
বৈশাখের খর তাপ যখন অসহ্য হয়ে ওঠে তখন বর্ষা সেই তপ্ত পৃথিবীতে
ঈশ্বরের
একটা আশীর্বাদ স্বরূপ। কবি তাই বর্ষাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন
এই ভাষায়ঃ
“এসো শ্যামল সুন্দর
আনো তব তাপহারা তৃষাহারা সঙ্গসুধা।
বিরহিনী চাহিয়া আছে আকাশে।।
সে যে ব্যথিত হৃদয় আছে বিছায়ে
তমালকুঞ্জপথে সজল ছায়াতে,
নয়নে জাগিছে করুণ রাগিনী।।“
বরষা তাপদগ্ধ ধরার বুকে একটা ভরসাও বটে। কবির মুগ্ধ কলম লিখল
আত্মহারা
কালিতেঃ
“এসেছে বরষা, এসেছে নবীন বরষা,
গগন ভরিয়া এসেছে ভুবনভরসা।
দুলিছে পবনে সনসন বনবীথিকা,
গীতময় তরুলতিকা।“
কিংবা আবার কখনও বলছেনঃ
“তৃষ্ণার শান্তি, সুন্দরকান্তি,
তুমি এলে নিখিলের সন্তাপভঞ্জন।।“
বর্ষা যেমন আশ্বাস তেমনি তার আধিক্য মানুষের জীবনযাত্রাকে সাময়িকভাবে
স্তব্ধও করে দেয়। এই বাস্তববোধ কবিরও আছে। তাই তিনি গাইলেনঃ
“ঝরঝর বরিষে বারিধারা
হায় পথবাসী, হায় গতিহীন, হায় গৃহহারা।।“
বর্ষা যেমন সুন্দর, বর্ষা যেমন মনোহর, যেমন সে প্রয়োজনীয়, তেমনি
সে উপহার দেয়
এক একটি অলস কর্মহীন দিনকেও। অন্যদিনের সব কর্মচাঞ্চল্ল ঢেকে
যায়
বর্ষণমুখর একটি দিনের নিরবচ্ছিন্ন বারিপাতে।
“আষাঢ়সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল, গেল রে দিন বয়ে।
বাঁধনহারা বৃষ্টিধারা ঝরছে রয়ে রয়ে।।
একলা বসে ঘরের কোণে কী ভাবি যে আপন-মনে,
সজল হাওয়া যূথীর বনে কী কথা যায় কয়ে।“
বজ্রপাত বর্ষার শুধু অনুষঙ্গই নয় তার একটি অলংকারও বটে। মেঘে
মেঘে যখন ঘটে
শব্দের অনুরণন, আলোর স্ফুলিঙ্গ যখন খেলা করতে থাকে তখন বর্ষার
রূপ
প্রলয়ংকর বলে মনে হয়। তবু তার মধ্যেও কবির হৃদয় যেন মাদলের
শব্দের তালে তালে
দুলতে থাকে। প্রকৃতির এই নৃত্যসঙ্গীতানুষ্ঠান কবির কাছে বেশ
উপভোগ্য হয়ে ওঠেঃ
“বাদল-মেঘে মাদল বাজে গুরুগুরু গগন-মাঝে।।
তারি গভীর রোলে আমার হৃদয় দোলে,
আপন সুরে আপনি ভোলে।।“
বর্ষার আকাশ। বাদল মেঘে ভরা কালিঢালা কালো এক আকাশ। মাঝে মাঝে
দামিনীর
স্ফুলিঙ্গ। চোখের সামনে মণিমানিক্য যেমন ঝলমল করে ওঠে তেমনই
মনে হয়েছে
কবির। আত্মহারা কবি লিখলেনঃ
“বজ্রমাণিক দিয়ে গাঁথা, আষাঢ় তোমার মালা।
তোমার শ্যামল শোভার বুকে বিদ্যুতেরই জ্বালা।।“
আষাঢ়ের বর্ষা ভীষণ দামাল, ঝড়-ঝঞ্ঝ্বা, বজ্রপাত আর এলোমেলো হাওয়ায়
ভরা।তুলনায় শ্রাবণের বর্ষা শান্ত তবে বর্ষণের আধিক্যে ভরা। তখন ঝড়-ঝঞ্ঝ্বা নেই,নেই
বিশেষ দামাল হাওয়াও। বজ্রপাতকমে এসেছে। আকাশের সেই কালিমাওঅনুপস্থিত। পরিবর্তে রয়েছে
নিরবচ্ছিন্ন ধারাপাত। মন হারানো, মন উদাস করা এক একটা বর্ষণসম্পৃক্ত দিন।
“আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিনে
জানি নে, জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না।“
বর্ষার রূপে কবি কতটা মোহিত তা বোঝা যায় কবির এই লাইন কটি থেকেঃ
“হৃদয় আমার নাচেরে আজিকে ময়ূরের মত নাচে রে।
শত বরণের ভাব-উচ্ছ্বাস কলাপের মত করেছে বিকাশ,
আকুল পরান আকাশে চাহিয়া উল্লাসে কারে যাচে রে।।“
আনন্দের আর সীমা পরিসীমা নেই কবির। কবির কলম তাই গেয়েই চললঃ
“মোর ভাবনারে কী হাওয়ায় মাতালো,
দোলে মন দোলে অকারণ হরষে।
হৃদয়গগনে সজল ঘন নবীন মেঘে
রবীন্দ্র-কাব্যে বর্ষা
রসের ধারা বরষে।।“
বর্ষার একঘেয়েমিতে কবিও খানিক বিরক্ত। তাই মেঘে কেটে গিয়ে তার
ভেতর থেকে
যখন উঁকি পাড়তে থাকে অসহায় সূর্যরশ্মি তখন চপল শিশুর সারল্য
আর বালকের
চাঞ্চল্ল ফুটে ওঠে কবির কলমে। কবি লেখেনঃ
“মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি। আহা, হাহা, হা।
আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি। আহা, হাহা, হা।
কী করি আজ ভেবে না পাই, পথ হারিয়ে কোন বনে যাই,
কোন মাঠে যে ছুটে বেড়াই সকল ছেলে জুটি। আহা হাহা হা।
কেয়া-পাতার নৌকো গড়ে সাজিয়ে দেব ফুলে—
তালদিঘিতে ভাসিয়ে দেব, চলবে দুলে দুলে।
রাখাল ছেলের সঙ্গে ধেনু চরাব আজ বাজিয়ে বেণু,
মাখব গায়ে ফুলের রেণু চাঁপার বনে লুটি। আহা হা-হা হা।।“
এক সময়ে ধারাপাতের পর্ব কমে কমে ক্রমে শেষ হতে থাকে। বর্ষার
রূপে মুগ্ধ কবির
কলমও তোলে বিষাদের সুরঃ
“বাদল-ধারা হল সারা, বাজে বিদায়-সুর।
গানের পালা শেষ করে দে রে, যাবি অনেক দূর।
ছাড়ল খেয়া ও পার হতে ভাদ্রদিনের ভরা স্রোতে রে,
দুলছে তরী নদীর পথে তরংগবন্ধুর।।“
মাটিতে এবার কাশফুলে। বাতাসে শিউলির গন্ধ। বর্ষাশেষের আকাশেও
তাই সাদা পেঁজাতুলোর মত ভাসমান মেঘ। যার পরতে পরেতে শরতের সোনালী রোদের উঁকি ঝুঁকি।
শান্ত
বাতাসে উড়ে চলা সেই মেঘ-বলাকার দিকে চেয়ে উদাস কবি লিখলেনঃ
“মন মোর মেঘের সঙ্গী,
উড়ে চলে দিগ দিগন্তের পানে
নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীতে
রিমঝিম রিমঝিম রিমঝিম।।“
আমাদেরও মন উড়ে চলুক আজ নীলিমার বুকে ভেসে চলা মেঘ-বলাকার পিঠে
চড়ে বিশাল
রবীন্দ্রকাব্যের মহাকাশে। জানি আমাদের সামান্য শ্রদ্ধা কবির
আকশচুম্বী প্রতিভার
পাদস্পর্শ করতে পারবে কিনা তবু শ্রদ্ধা থাকুক নিরন্তর।
অনু গল্প / "গোধূলির শেষে"/ রীনা রায়।
ব্যানার্জী বাড়ির হরিমন্দির থেকে ঘন্টাধ্বনি শোনা যাচ্ছে, রাস্তা দিয়ে রাধু বোষ্টমী খঞ্জনী বাজিয়ে হরিনাম সংকীর্তন করতে করতে পেরিয়ে গেল, প্রতিদিন ঠিক ভোর সাড়ে চারটেয় এই শব্দে মৃণ্ময়ীদেবীর ঘুম ভাঙে।
কাল সারারাত বিছানায় শুয়ে শুধু এপাশ ওপাশ করেছেন, কিছুতেই দুটো চোখের পাতা এক করতে পারেননি।
আজকাল ঘুম কতটুকুই বা হয়,কিন্তু কাল নন্দিতার মুখে খবরটা শোনা ইস্তক মনটা বড় বিমর্ষ হয়ে আছে, একটা অজানা আশঙ্কায় মনের দোলাচল কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না।
অনেক অনেকক্ষণ চুপ করে শুয়ে থেকে বিছানার ওপর উঠে বসলেন মৃন্ময়ী দেবী। একটা সিদ্ধান্ত তো নিতেই হবে, এইভাবে অবিশ্বাস নিয়ে চলা যায়না।
---
প্রায় পনেরো বছর হতে চললো স্বামী অমলেন্দু ইহজগতের মায়া কাটিয়ে পরলোকগমন করেছেন।
তখন ইন্দ্রর বয়েস আর কত --আঠারো,উনিশ হবে, সবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। কোনো আগাম আভাস না দিয়ে সুস্থ মানুষটা হঠাৎ রাত্রে বুকে ব্যথা, তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো।
মাত্র সাতদিন,মানুষটাকে যখন একটু সুস্থ মনে হচ্ছিলো, তখনই আবার একটা মেজর অ্যাটাক, আর বাঁচানো গেলোনা, মানুষটা কোনো কিছু না বলেই মৃণ্ময়ীকে বড্ড একা করে চলে গেলো।
অবশ্য স্বামীর অফিসে একটা চাকরি তিনি পেয়েছিলেন, তাই অভাবের মুখোমুখি হতে হয়নি কোনোদিন।
তখন, ইন্দ্র আর মৃন্ময়ী দুজন দুজনকে আঁকড়ে বেঁচেছেন।
ছেলেই হয়ে উঠেছিলো মৃন্ময়ীর ধ্যান জ্ঞান।
আজ ছেলে সুপ্রতিষ্ঠিত, বৌমাটিও বড্ড ভালো।
সবকিছুই ঠিক আছে, কিন্তু নন্দিতার বলা ঘটনাগুলো মনকে ভীষণ নাড়া দিয়ে গেছে।
প্রথম ঘটনাটি ওর এক বন্ধুর নিজের দিদির সাথে ঘটেছে।
স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলের সংসারেই থাকতেন ওই ভদ্রমহিলা, শিক্ষিত ছেলে মাকে বিদেশে তার কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়ার নাম করে, সব সম্পত্তি বিক্রি করে মাকে এয়ারপোর্টে একা নিঃসম্বল অবস্থায় ফেলে রেখে নিজে বিদেশ পাড়ি দিয়েছে।
ভদ্রমহিলা প্রথমে কিছু বুঝতেই পারেননি, তারপর কেমন যেন বোবা হয়ে যান, এবং কিছুদিন পর একরাতে বুকে প্রচন্ড ব্যথা ও শ্বাস কষ্ট হয় এবং তিনি মারা যান, আত্মীয়রা ছেলেকে খবর দিলেও সে আসেনি!
আর একটি ঘটনা, ছেলে মাকে গুরুদেবকে প্রণাম করাতে যাওয়ার নাম করে মাকে নিয়ে বেরোয়, নিজে গাড়ি ড্রাইভ করে, একটা ফাঁকা রাস্তায় মাকে মিষ্টি কিনতে পাঠিয়ে নিজে গাড়ি নিয়ে চলে যায়, মা অপেক্ষায় থাকতে থাকতে একসময় বোধহয় নার্ভাস ব্রেকডাউন থেকেই জ্ঞান হারায়, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ভদ্রমহিলাকে আশ্রয় দেয়, কিন্তু তিনি আর ছেলের সাথে যোগাযোগ করতে চাননি। এই ঘটনা টা অবশ্য নন্দিতা টিভি তে দেখেছে।
.......
রাত এগারোটা বাজে, বৌমা মোবাইল নিয়ে খুটখাট করছে, আর টিভিটাও চলছে। ছেলের ঘরে উঁকি দিয়ে মৃন্ময়ী দেবী দেখলেন, ইন্দ্র একমনে ল্যাপটপে কাজ করছে, পাশে নাতিসাহেব অঘোরে ঘুমুচ্ছে।
পা টিপে ঢুকলেন ওঘরে। নাতির মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ছেলের মাথায় আলতো করে বিলি কেটে দিলেন।
ইন্দ্র একবার মুখ তুলে তাকালো, 'কিছু বলবে মা?' তারপর কি মনে হওয়াতে ল্যাপটপ বন্ধ করে শুয়ে পড়লো, 'দাও তো মা, একটু হাত বুলিয়ে, কতদিন ঘুম পাড়িয়ে দাওনি', মৃন্ময়ী দেবীর চোখে জল এসে গেল।
এই ছেলে তার সাথে কখনো অমন অমানবিক আচরণ করবেনা, কিন্তু ওই বৃদ্ধারাও তো নিজের ছেলেকে এভাবেই বিশ্বাস করতেন, কোনোদিন কি ওঁরাও ভেবেছিলেন যে নিজের ছেলে সর্বস্বান্ত করে এভাবে রাস্তায় ফেলে চলে যাবে? ছেলের অবহেলা যে কিছুতেই তিনি সহ্য করতে পারবেন না।
ছেলের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে মৃণ্ময়য়ীদেবীর মনের মেঘ কেটে যাচ্ছিলো, তবু নিজের সিদ্ধান্তে তিনি অবিচল রইলেন।
নিজের ঘরে ফিরে,ঘরের দরজা বন্ধ করে খুব সামান্য জিনিস, কটা জামাকাপড়, টুকিটাকি কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় একটা ছোটো ব্যাগে ভরে রাখলেন, ভোর হলে সবাই উঠে পড়ার আগেই বেরিয়ে পড়তে হবে। সব তো ঠিক করাই আছে, রিকশায়ালাকেও বলা আছে, তারপর তো বাসস্ট্যান্ড পৌঁছলেই অনেক বাস পেয়ে যাবেন।
আর রাধু বোষ্টমির গানই তো তার এতদিনের এলার্ম ক্লক হয়ে গেছে।
.......
মৃণ্ময়ীদেবী নিজে চাকরি করেছেন, স্বামীর টাকাও তার নামেই আছে, ছেলে ভালো চাকরি করে, চাকরি পাওয়ার পর থেকে,তার টাকায় ছেলে কখনো হাত দেয়নি, তবু তিনি নাতির নামে বেশ কিছু টাকা আলাদা রেখে দিয়েছেন।
এই কদিনে নিজের একাউন্ট এর টাকা থেকেই যাবতীয় ফর্মালিটিস কমপ্লিট করেছেন।
তাকে বারবার বেরোতে দেখে বৌমা তুলি জানতে চেয়েছে, "এই রোদে কোথায় যাচ্ছো বলো তো? শরীর খারাপ হবে যে, যা কাজ তোমার ছেলেকে বললেই তো পারো।"
উত্তরে তিনি কখনো বলেছেন, ''মন্দিরে যাচ্ছি", "কখনো "ব্যাংকে একটু কাজ আছে রে" আবার কখনো বলেছেন, "এই একটু নন্দিতার সাথে দেখা করে আসি!"
আসলে তিনি উকিলের কাছে গেছেন, নিউজপেপার দেখে বৃদ্ধাশ্রম খুঁজে বের করে সেগুলো দেখে এসেছেন।
এই বৃদ্ধাশ্রমটি ভারী পছন্দ হয়েছে, আধুনিক সব ব্যবস্থা আছে, কিন্তু প্রচুর গাছপালা দিয়ে ঘেরা জায়গাটি ভারী মনোরম, ব্যবস্থাপনাও বেশ ভালো শুনেছে। তাছাড়া এখানে দুজন আবাসিক ডাক্তার ছাড়াও এদের নিজেদেরও চব্বিশ ঘন্টার ডাক্তার আছে।
কিছু টাকা এককালীন দিতে হবে, তারপর প্রতি মাসে কিছু করে, মৃণ্ময়ীদেবী আপাততঃ এককালীন টাকাটা দিয়ে দোতলায় নিজের জন্য একটা ঘর বুক করে রেখেছেন।
প্রতি মাসে যে টাকাটা দিতে হবে তিনি হিসেব করে দেখেছেন, ওটা পেনশন থেকেই দিতে পারবেন।
এখানে অনেকরকম ঘর আছে, সিঙ্গল রুম, ডাবল শেয়ারিং, ডরমিটরি ইত্যাদি।
স্বাভাবিকভাবেই সিঙ্গল রুমের জন্য বেশি টাকা লাগে, কিন্তু বেশি লাগলেও মৃণ্ময়ীদেবীর রুম শেয়ারিং এ থাকা পছন্দ হলোনা, সকাল বিকেল অন্যদের সাথে সময় কাটালেও নিজের ঘরে একজন অপরিচিত মানুষের সাথে এই বয়েসে এসে থাকতে আর মন সায় দিলোনা।
সব ব্যবস্থা করে এখানে আসার প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করে রাখলেও মনের মধ্যের খচখচানি টা কিছুতেই যাচ্ছে না।ইন্দ্র, তার একমাত্র সন্তান ব্যাপারটা কিভাবে নেবে!
......
কাল সারারাত ঘুম আসেনি, আজ রাধু বোষ্টমির সংকীর্তন শোনার আগেই বিছানা ছাড়লেন। ঘড়িতে চারটে বাজে। বাথরুম গিয়ে স্নান করে ফ্রেশ হয়ে নিলেন। বৌমা তুলি সাড়ে পাঁচটায় উঠে পড়ে, ছেলের স্কুল, ইন্দ্রর অফিস থাকে তাই ওকে উঠতেই হয়, তার আগেই বেরিয়ে যেতে হবে।
ঠিক পাঁচটার সময় নিজের ছোট্ট ব্যাগ টা হাতে নিয়ে তিনি দরজা খুলে বেরোলেন।
ইন্দ্রর ঘরের দিকে তাকালেন, দরজা ভেজানো আছে, একটা দীর্ঘশ্বাস অজান্তেই বেরিয়ে এলো। ঠাকুরঘরে গিয়ে প্রণাম করলেন, তারপর বেরিয়ে এলেন।
বাইরের ছোটো গেটটা খুলতে গিয়ে তালা দেখে মনে পড়লো, চাবিটা বারান্দাতেই ঝোলানো থাকে, ওটা আনা হয়নি, চাবি নেওয়ার জন্য পিছন ফিরতেই তিনি দেখলেন, ইন্দ্র, তুলি, এমনকি ছোট্ট তাতানও সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে, সবাই ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
মৃণ্ময়ীদেবী একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন, ইশ আর একটু আগে বেরোনো উচিত ছিলো!
"চাবিটা আমার কাছে মা, আর তুমি যত আগেই বেরোতে, আমরা ঠিক এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতাম"
মৃণ্ময়ীদেবী বুঝতে পারছিলেন না, ইন্দ্র ঠিক কি বলতে চাইছে...
ঠিক সেইসময় তাতান দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে বললো,"ঠাম্মা, তুমি আমাদের ছেড়ে চলে যাবে? আমার যে কান্না পাবে"
তুলিও ছুটে এসে ওর হাত থেকে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বললো, "এতদিনেও আমাকে মেয়ে ভাবতে পারলেনা মা?"
ইন্দ্র দুচোখে জল নিয়ে অভিমান করে দাঁড়িয়ে আছে।
আস্তে আস্তে বললো, "জানো মা, সেই ছোটবেলায় তুমি একদিন বড়মার সাথে সিনেমা দেখতে গেছিলে, আমি জানতাম তুমি সন্ধ্যে ছটার মধ্যে ফিরবে, কিন্তু তোমরা বোধহয় কারুর একটা বাড়ি গেছিলে, ফিরতে দেরি হচ্ছিলো, আমি তখন খুব ছোটোও নয়, সেভেন কি এইটে পড়ি, আমার মনে হচ্ছিলো, আমার পৃথিবীটা শুন্য, কষ্টে আমার বুকটা কেমন হচ্ছিলো, মনে হচ্ছিলো, আমি মরেই যাবো।"
মৃণ্ময়ীদেবী উঠে এসে ছেলের মাথাটা টেনে নিলেন।
ইন্দ্র মাকে জড়িয়ে ধরে সেই সেদিনের মতোই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।বহুবছর আগের সেই দিনটা মৃণ্ময়ীদেবীর চোখের সামনে ভেসে উঠলো।
মৃণ্ময়ীদেবীকে রোজ বেরোতে দেখে তুলিই নাকি ইন্দ্রকে সব বলেছিলো, ইন্দ্র মায়ের প্রাণের বন্ধু নন্দিতা মাসিকে একটু জেরা করতেই মাসি সব গড়গড় করে বলে দেয়। আর তারপর মা যেখানে গেছে, ইন্দ্র প্রতিদিন পিছু নিয়েছে, এমনকি বৃদ্ধাশ্রম "গোধূলির শেষে" তেও।
সেদিন মা চলে আসার পর ম্যানেজারের সাথে কথা বলে, সব প্রমান দেখিয়ে টাকাও ফিরিয়ে নেয়।
তুলি বললো, "মা জানোতো, সেদিন ও যখন ফিরে এলো, ওকে একজন হেরে যাওয়া মানুষ মনে হচ্ছিলো, খালি বলছিলো,'মা আমাকে এই ভাবে? মা কি করে ভাবলো?"
মৃণ্ময়ীদেবী দুচোখ ভরা জল নিয়ে, তার ভালোবাসার মানুষগুলোকে দেখতে দেখতে ভাবলেন,আমিও কি কষ্ট কম পেতাম!
আস্তে আস্তে পূবাকাশে আলো দেখা দিচ্ছে, রাতের আঁধার সরিয়ে নতুন দিনের শুরু হলো, পাখিদের কিচিরমিচির এ বাতাস মুখরিত হতে থাকলো।
মৃণ্ময়ীদেবী নিজের ছেলের দিকে তাকিয়ে ভাবলেন, 'তোর মতো ছেলে যেন সব মা বাবা পায়!
শহীদের মেয়ে / অর্পিতা ভট্টাচার্য
ছোট্ট রিনি বুঝতে
পারেনা , কেন অন্য বন্ধুর বাবাদের মতো, তার বাপি তার সাথে সবসময় থাকেনা। বন্ধুরা
ওদের বাবাদের সাথে কতো মজা করে, বেড়াতে যায়। ওদের বাবারা কতো কি খাওয়ার জিনিস,
খেলনা কিনে দেয়।
আর তার বাপি কতোদিন
পরপর আসে। অবশ্য যখন থাকে , তখন রিনি একটুও বাপিকে ছাড়েনা। বাপিও ওর সাথে কতো মজা
করে, আদর করে, খাইয়ে দেয়, গল্প বলে ঘুম পাড়ায়। তারপর কিছুদিন থেকেই আবার চলে
যায়। রিনির খুব কান্না পায়। বাড়িতে তখন শুধু ঠাম্মা, মা আর রিনি।
রিনি মনখারাপ করলে মা
বলে , তার বাপি নাকি দেশকে রক্ষা করে, দেশের সব মানুষের নিরাপত্তার ভার নিয়েছে।
ওতো কঠিন কথা বোঝেনা রিনি। ও শুধু ভাবে কেন তার বাপিকেই এসব করতে হবে? ধুর তার
বাপি যদি আর সবার বাবার মতো বাড়িতে থাকতো কতো ভালো হতো। ওর বাপি ওর কাছে থাকেনা
বলেই তো ওর বন্ধুরা কতো সময় বেশি বেশি করে ওদের বাবার গল্প করে। ওর তেমন কিছুই
বলার থাকেনা। ছোট্ট রিনি তখন সবার কাছ থেকে পালিয়ে এসে ঠাম্মার কোলে মুখ লুকিয়ে
কাঁদে।
সেদিন সারা গ্রামের
মানুষ তাদের বাড়িতে হাজির হলো। সবাই বলছে তার বাপি নাকি মস্ত বড়ো কাজ করেছে। তার
বাপি নাকি দেশের জন্যে "শহীদ" হয়েছে।
এই শহীদ হলে কি হয় রিনি
জানেনা কিন্তু এটা বুঝতে পারে , শহীদ হওয়া মানে খুব ভালো কিছু করা। সবাই
বলে বাপি আজ বাড়ি আসছে। রিনির খুব আনন্দ হয়। শুধু ঠাম্মা যে কেন কেঁদে যাচ্ছে।
তাহলে বোধহয় ঠাম্মা আনন্দে কাঁদছে। আর মা কেমন চুপ করে বসে আছে। মার বুঝি রিনির
মতো আনন্দ হচ্ছে না ? ওঃ বাপি এতোদিন আসেনি বলে মা রাগ করেছে। রিনি মাকে বলে, বাপি
এলে খুব বকে দেবে।
একটা বড়ো গাড়ি এসে
দাঁড়ায় বাড়ির সামনে। অনেক গুলো লোক মিলে একটা ভারতের পতাকা দিয়ে
সাজানো, বাক্স নিয়ে আসছে।
ভারতের পতাকা রিনি
চেনে। তার বাপী চিনিয়েছে তাকে। বাপী বলে ওই পতাকাই নাকি বাপির ভগবান।
সবার মধ্যে ও বাপিকে
খোঁজে। বলে "আমার বাপি কোথায়" ? রিনির মামা এসে রিনিকে জড়িয়ে ধরে।
বাক্সটার ঢাকনা খুলতেই
রিনি দেখে বাপি বাক্সের মধ্যে কেমন চুপ করে শুয়ে আছে। মামা বলে বাপি ঘুমাচ্ছে।
তাহলে ঠাম্মি বাপিকে জড়িয়ে কাঁদছে কেন ? রিনি তার ছোট্ট দুটো হাত দিয়ে
বাপিকে ঝাঁকাতে থাকে আর বলে "ও বাপি, তুমি চোখ খোলো, ওঠো। আমার সাথে খেলবে
চলো "। বাপি ওঠেনা। ঠাম্মি আরও জোড়ে কেঁদে ওঠে। এবার রিনিও ভয় পেয়ে কেঁদে
ওঠে। মা এসে রিনিকে কোলে নিয়ে বলে "তোমার বাপি আর কোনদিন কথা বলবে না। কিন্তু
সবাই তোমার বাপির কথা বলবে। তোমার বাপি শহীদ হয়েছেন।" "শহীদ হলে বুঝি
এমন হয় ? তাহলে শহীদ হওয়া খুব খারাপ" রিনি বলতে বলতে খুব জোড়ে কাঁদে। মা
কঠিন গলায় বলে "তুমি শহীদের মেয়ে, তুমি একদম কাঁদবে না। তুমি শুধু গর্ব
করবে। দেখছো না আমি কাঁদছি না।" তার নরম সরম মাকে, কেমন অচেনা লাগে রিনির।
সবাই বাপিকে নিয়ে চলে
যায়। রিনিকে শক্ত করে চেপে ধরে মা বলে ওঠে "বন্দেমাতরম"। রিনি দেখে তার
বাপিকে সবাই প্রনাম করছে। দলে দলে লোক সাথে যাচ্ছে "বন্দেমাতরম",
"শহীদ অমর রহে" বলতে বলতে। রিনির বাপি আর রিনির নয়। সে এখন অনেক অনেক বড়ো
মানুষ, সে এখন "শহীদ"।
বাপির জন্য রিনির খুব
গর্ব হয়। দু হাতে চোখ মুছে ,
ছোট্ট রিনিও এবার তার
কাঁপা কাঁপা গলায় বলে ওঠে "বন্দেমাতরম"। "শহীদ অমর রহে।"
:Ikigai The Japanese Secret to a Long and Happy Life Might Just Help You Live a More Fulfilling Life by Durba Mitra
:Ikigai The Japanese Secret to a Long and Happy Life Might Just Help You
Live a More Fulfilling Life
In
Japan, millions of people have ikigai (pronounced Ick-ee-guy)—
a reason to jump out of bed each morning.
What’s
your reason for getting up in the morning?
The
Japanese island of Okinawa, where ikigai has
its origins, is said to be home to the largest population of centenarians in
the world.
· your values
· things you
like to do
· things you
are good at
The cross section of the
three lists is your ikigai.
Studies
show that losing one’s purpose can have detrimental effect.
Just as humans have lusted after objects and money
since the dawn of time, other humans have felt dissatisfaction at the
relentless pursuit of money and fame and have instead focused on something
bigger than their own material wealth. This has over the years been described
using many different words and practices, but always hearkening back to the
central core of meaningfulness in life.
ikigai is seen as
the convergence of four primary elements:
·
What you love (your passion)
·
What the world needs (your
mission)
·
What you are good at (your
vocation)
·
What you can get paid for
(your profession)
Discovering
your own ikigai is said to bring fulfilment, happiness and make you live
longer.
Want to
find your Ikigai? Ask yourself the following four questions:
·
1. What do I love?
·
2. What am I good at?
·
3. What can I be paid for
now — or something that could transform into my future hustle?
·
4. What does the world need?
The ten
rules that can help anyone find their own ikigai: -
·
1. Stay active and
don’t retire
·
2. Leave urgency behind
and adopt a slower pace of life
·
3. Only eat until you
are 80 per cent full
·
4. Surround yourself
with good friends
·
5. Get in shape through
daily, gentle exercise
·
6. Smile and
acknowledge people around you
·
7. Reconnect with
nature
·
8. Give thanks to
anything that brightens our day and makes us feel alive.
·
9. Live in the moment
·
10. Follow your ikigai
What
you deeply care about can unlock your ikigai
Follow
your curiosity.
·
The problem for millions of
people is that they stop being curious about new experiences as they assume responsibilities
and build routines.
·
Their sense of wonder starts
to escape them.
·
But you can change that,
especially if you are still looking for meaning and fulfilment in what you do
daily.
Albert Einstein encouraged us
to pursue our curiosities. He once said:
“Don’t think about why you
question, simply don’t stop questioning. Don’t worry about what you can’t
answer, and don’t try to explain what you can’t know. Curiosity is its own
reason. Aren’t you in awe when you contemplate the mysteries of eternity, of life,
of the marvellous structure behind reality? And this is the miracle of the
human mind — to use its constructions, concepts, and formulas as tools to
explain what man sees, feels and touches. Try to comprehend a little more each
day. Have holy curiosity.”
A classic example is Steve Jobs’ curiosity for typefaces
which led him to attend a seemingly useless class on typography and to develop
his design sensibility.
Later, this sensibility
became an essential part of Apple
computers and Apple’s core differentiator in the market.
We are born curious. Our
insatiable drive to learn, invent, explore, and study deserves to have the same
status as every other drive in our lives.
Fulfilment
is fast becoming the main priority for most of us.
Millions of
people still struggle to find: -
·
What they are meant to do?
· What
excites them?
· What makes
them lose the sense of time?
·
What brings out the best in
them
“Our
intuition and curiosity are very powerful internal compasses to help us connect
with our ikigai,” Hector Garcia and Francesc Miralles write.
What is the
one simple thing you could do or be today that would be an expression of your
ikigai?
Find it and
pursue it with all you have, anything less is not worth your limited time on
planet earth.
COMPILED BY:
DURBA MITRA
Subscribe to:
Posts (Atom)
সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া
সম্পাদকীয় ও চিত্রাঙ্কন-গৌতম সেন ... সম্পাদনা ও কারিগরী সহায়তা - নূপুর বড়ুয়া

-
ধর্ম আমায় ধারণ করেছে আগুন করেছি বর্ম ... দেখতে পাচ্ছ এই দাবানলে জ্বলছে অস্থি , চর্ম ? দেখতে পাচ্ছ উড়ছে ফিনিক্স , চাঁ...
-
শত চেষ্টা করে যখন একটা কাঠও জোগাড় করা গেল না , তখন নদীর চরে গর্ত খুঁড়ে অভাগীকে শোয়ানো হল । যে খড়ের আঁটি জ্বেলে কাঙালি মায়ের মুখে আগুন...
-
বিষাদের মেঘ ছেয়েছে আকাশে বৃষ্টি বুঝি আসন্ন— বাতাসের চোখ ছল ছল ভাসে প্রতীক্ষা কার জন্য? ওগো মেয়ে তুমি কার কথা ভাবো, সে কি ...
-
শুকনো বকুল চললি কোথায় ? গ্রহণলাগা দুপুরবেলা লাল মাটি পথ একলা চলা - রুদ্রপলাশ মোড়ের মাথায় ? কি বললি ? আজ বিকেলে মোরগ লড়াই ...
-
ওকি বৃষ্টির শব্দ ? নাকি পায়ের থেকে নূপুর খুলে হাতে নিয়ে তোর দৌড়ে আসার শব্দ ; যদি তাই হয় তবে এখন কেন ? এখন তো অনেক রাত , ব...
-
ছাদের কার্ণিশ ঘেঁষে রোজ খেলে মরে, একাকী দেয়ালে খেয়ালে বা অখেয়ালে... হেসে কুটে একাকার। মাথা নেড়ে নেড়ে অবাধ...
-
জীবনের পথ দিয়ে চলতে চলতে দিয়ার ক্লান্ত অবসন্ন মন্ ঘরের জানলায় চোখ রেখে আকাশটাকে দেখতে চাইত । কিন্তু তার আকাশটা হারিয়ে যেত , অভিমানে ...
-
বসন্তে যেমন ফুল ফোটে তেমন ফুল ঝরে। কুদরতের নিয়মে যত ফুল ফোটে ঠিক তত ফুলই ঝরে। আল্লা তালার হিসেব চুলচেরা। শুধু কি ঝরে ? ফুল কাঁদে , ফ...
-
হাইবারনেশানে যাই যখন তখন তার অবগাহনে ডুবে যেতে। ফিরে যাই সেই মাতোয়ারা দিনগুলোতে জীবনের জরদ্গভ প্রাচীর ডিঙিয়ে অদ্ভুত এক লুকোচুর...